যুবলীগ নেতার মামলা সিআইডিতে, সাংবাদিক শামস কোথায়?

সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে তুলে নেওয়ার নিন্দা-প্রতিবাদ চলছে, কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কিছু খোলাসা করছে না।

গোলাম মর্তুজা অন্তুবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2023, 07:04 PM
Updated : 29 March 2023, 07:04 PM

সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা হতে চললেও খোঁজ মেলেনি প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের।

তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তুলে নিয়েছে ধরে নিয়ে নিন্দা-প্রতিবাদ চলছে। তার মা উৎকণ্ঠিত হয়ে আছেন ছেলের জন্য।

তুলে নেওয়ার পর শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলার খবর দিয়েছে পুলিশ, সেই মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিআইডিকেই।

সিআইডিসহ কোনো সংস্থা শামসকে আটকের খবর নিশ্চিত করেনি; যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ইঙ্গিত দিয়েছেন, যেহেতু মামলা হয়েছে, পুলিশ আটক করতেও পারে।

শামস প্রথম আলোর সাভারে কর্মরত নিজস্ব প্রতিবেদক। তিনি থাকতেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া আমবাগান এলাকায় একটি ভাড়া বাসায়। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পাস করেন তিনি।

তার ভাই ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে অভিযান চালাতে গিয়ে প্রাণ হারানো পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলামও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।

প্রথম আলোয় গত ২৬ মার্চ প্রকাশিত যে প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা চলছে, তার প্রতিবেদক ছিলেন শামস। ওই প্রতিবেদনে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ উপাদান থাকার কথা বলছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

ভোররাতে তুলে নেয়

মঙ্গলবার রাতে শামসের সঙ্গে তার বাসায় ছিলেন একটি সংবাদ মাধ্যমের সাভার প্রতিনিধি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই সংবাদকর্মী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা দুজন দুই রুমে ঘুমিয়েছিলাম। ভোর ৪টার দিকে উনি আমাকে ডেকে তোলেন, বলেন, ‘ওঠ, পুলিশ আসছে’। উঠে দেখি ঘরের ভেতর পাঁচজন। একজন শামস ভাইয়ের রুমে ঢুকেছেন। তার ফোন, ল্যাপটপ, একটা পোর্টবল হার্ডডিস্ক ততক্ষণে তারা হাতে নিয়েছে।

“ওয়ারড্রব থেকে একটা ব্যাগ নিয়ে তাতে সেগুলো ঢোকায় তারা। এরপর বলে যে ‘উনাকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি, একটু পরে কথাবার্তা বলে দিয়ে যাব’।”

৪৫ মিনিট পর তারা আবার বাসায় ফিরে আসেন জানিয়ে সেই সাংবাদিক বলেন, “ঘরের ভেতর তারা শামস ভাইয়ের ছবি তোলে। জব্দ মালপত্রের তালিকা করে। আমার ও বাড়িওয়ালার স্বাক্ষর নেয়। বাড়িওয়ালা জিজ্ঞেস করেছিল, তারা কারা। জবাবে তারা বলেছে, সিআইডির লোক।”

দ্বিতীয়বার তারা যখন আসে, তাদের সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন এবং আশুলিয়া থানার এসআই রাজু মণ্ডলকে দেখার কথা বলেছেন ওই সাংবাদিক।

কী ঘটেছিল জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) সুদীপ্ত শাহীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাকে ফোন করে বলেন, সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে কোথাও প্রশাসনিক কাজে যাবেন, তিনি যেন তাদের পার করে দিতে সহায়তা করেন।”

তারা হোলি আর্টিজানে প্রাণ হারানো পুলিশ কর্মকর্তা রবিউলের স্ত্রী উম্মে সালমার বাসা চেনানোর কথা বলেছিলেন বলে সুদীপ্ত জানান। শামসের ভাবি উম্মে সালমা এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত।

সুদীপ্ত শাহীন বলেন, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিরাপত্তাকর্মী তাকে ফোন করে জানান যে ‘পুলিশের দলটি’ আসলে উম্মে সালমার দেবর সাংবাদিক শামসকে খুঁজছে, হয়ত তাকে আটকও করেছে।

ওই খবর পেয়ে আমবাগান এলাকায় যাওয়ার কথা জানিয়ে সুদীপ্ত শাহীন বলেন, সেহরির সময় হয়ে যাওয়ায় শামসকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাসানী হলের সামনের বটতলায় খেতে যান। সে সময় পুলিশের দলটিতে মোট ১৪ জন ছিলেন। এতজন সাদা পোশাকের পুলিশ বটতলায় গেলে কোনো ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে কিনা’ সেই আশঙ্কায় তিনি বটতলায় তাদের সঙ্গী হয়েছিলেন। খাওয়া শেষে তিনি আর তাদের সঙ্গে যাননি।

ওই ব্যক্তিরা যে পুলিশের, তা কীভাবে নিশ্চিত হলেন- প্রশ্নে সুদীপ্ত শাহীন বলেন, দলে থাকা এক এসপিকে তিনি আগে থেকেই চেনেন। এছাড়া পুলিশের ওই দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের একজন ছাত্র ছিলেন, যিনি এখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন বলে পরিচয় নিয়ে সুদীপ্তের মনে কোনো সন্দেহ নেই।

Also Read: প্রথম আলোর প্রতিবেদককে ‘তুলে নেওয়ার’ খবর

Also Read: কেউ বিচার চাইলে পুলিশ ব্যবস্থা নিতেই পারে, বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

যে বাড়িতে শামস থাকতেন, তার মালিকের নাম ফেরদৌস আলম কবীর। তিনিও ঘটনার একই ধরনের বিবরণ দিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ৪টার ঠিক আগে আগে পাশের বাড়ির একজনকে সাথে নিয়ে কয়েকজন বাসায় এসে বলেন তারা সিআইডির লোক। তারা গেট খুলে দিতে বলেন, জানতে চান এখানে সাংবাদিক শামস থাকে কি না?”

এরপর তাদের কথায় শামসের ফ্ল্যাটের দরজায় নক করে তাদের ডেকে তোলেন ফেরদৌস। তিনি বলেন, “তারা শামসের মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়ে তাকেসহ বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলে যায়, শামসকে নিয়ে তারা সেহরি খেতে বটতলায় যাচ্ছে।

“কিছুক্ষণ পর তারা আবার ফিরে আসে। তখন ৬-৭ জন ছিল। একজনের পরনে পুলিশের পোশাক ছিল। এরপর তারা শামসকে নিয়ে চলে যায়।”

আমবাগান এলাকার রাস্তাগুলো সরু বলে ওই দলটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গাড়ি রেখে হেঁটে এসেছিল বলে জানান তিনি।

তারপর শামসকে কোথায় নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আর কেউ কোনো ধারণা দিতে পারেননি।

সাংবাদিক শামসকে এভাবে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুপুরে মিছিল হয়েছে। সাংবাদিক সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।

শামস কোথায়, খোলাসা করছে না

সামসকে তুলে নেওয়ার পর প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বুধবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোর ৪টার দিকে বাসা থেকে শামসকে তুলে নিয়ে গেছে সিআইডি পরিচয়ধারীরা। এর প্রতিকার পাওয়ার জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

সাভার থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এরকম কথা তিনিও ‘শুনেছেন’।

থানা পুলিশ কিছু ‘জানে না’ বলার পর সকালে সিআইডির ঢাকা বিভাগের ডিআইজি মো. ঈমাম হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “এরকম কিছু ঘটেনি।”

এরপর দিনভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের কথায় ইঙ্গিত মেলে, শামস পুলিশের হাতেই আটক রয়েছেন।

তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “স্বাধীনতা দিবসের দিন যেভাবে অসত্য বক্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে, তাতে যে কেউ সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয়ে বিচার চায়, তাহলে পুলিশ কিন্তু ব্যবস্থা নিতেই পারে।”

“আমি যতটুকু জানি, এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে, সে কারণেই হয়ত সিআইডি...” কথা অসমাপ্ত রাখেন তিনি।

মামলা হলেও রাতের আঁধারে এভাবে কোনো ব্যক্তিকে বাসা থেকে তুলে আনা যায় কি না- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমার কাছে সব টুকরো টুকরো খবর আসছে। পুরো বিষয়টা বলতে হলে আমাকে আর একটু সময় দিতে হবে।”

এরপর দিনভর সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শামসে আটকের নিন্দা জানালেও তার বিষয়ে পুলিশ কোনো বক্তব্যই দেয়নি।

সিআইডির অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়াকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস পাঠালেও সাড়া দেননি।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান দুপুরে একবার ফোন ধরে বলেছিলেন, তিনি শামসের বিষয়ে জেনে তারপর জানাচ্ছেন।

এরপর রাত পর্যন্ত তাকে কয়েকবার কল করলেও তিনি আর ফোন ধরেননি।

তেজগাঁও থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শামসকে আদালতে নেওয়া হতে পারে, সেই ধারণা থেকে পুরান ঢাকার আদালতেও ভিড় জমান সাংবাদিকরা। কিন্তু সেখানেও তাকে নেওয়া হয়নি।

কাউকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু শামসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, তাই খোলাসা করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সর্বোচ্চ আদালতের এমন নির্দেশনাও রয়েছে- কাউকে গ্রেপ্তার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে, গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে কারণ জানাতে হবে, গ্রেপ্তার ব্যক্তির নিকট আত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাতে হবে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে তার পছন্দ অনুযায়ী আইনজীবী ও আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে।

Also Read: প্রথম আলোর শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

যুবলীগ নেতার মামলা, তদন্তভার সিইআইডিতে

শামসের খবর জানতে সংবাদকর্মীদের তৎপরতার মধ্যে দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই প্রথম মামলা হওয়ার খবর দেন। তবে কে কোথায় মামলা করেছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি দেননি।

এরপর তেজগাঁও থানায় ওই মামলা দায়েরের খবর পাওয়া যায়। জানা যায়, মামলাকারীর নাম গোলাম কিবরিয়া ওরফে পিয়াস।

থানা থেকে বলা হয়, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। অর্থাৎ শামসকে তুলে আনার আগে মামলাটি হয়েছে।

মামলাকারী কিবরিয়া ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা দলীয় কোনো বিষয় না। আমি ব্যক্তিগতভাবে সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করেছি।”

শামসুজ্জামান শামসকে ১ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ করে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, “এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিগণ অনুমতি ব্যাতিরেকে মিথ্যা তথ্য উপাত্তসহ মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার (করে) আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাবার উপক্রম ও সহায়তার অপরাধ করিয়াছে।”

মামলার বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আজিমুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। মামলায় কেবল একজনের নাম রয়েছে। আমরা আসামিকে বুঝে পাইনি। মামলা সিআইডিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।”

মায়ের প্রশ্ন, ছেলে কোথায়?

শামসের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার কাটিগ্রামে; সেখানে থাকেন তার মা করিমন নেসা। তিনি ছেলেকে তুলে নেওয়ার খবর পান সকাল ১০টায়। এতে তিনি ভেঙে পড়লে তার ভাই গিয়ে তাকে ধামরাইয়ের ডেউটিয়ায় তার বাড়িতে নিয়ে যান।

দুপুরে সেখানে গিয়েও কান্না আর বিলাপ করতে দেখা যায়। মাঝে মাঝে সংজ্ঞাও হারিয়ে ফেলছিলেন তিনি।

মামলা খবর শুনে করিমন নেসা বলছিলেন, “আমার পোলায় কি চোর না ডাকাত? ওরে কীসের মামলায় দিছে।

“আর ওরে ধইরা নিল কেন, আমার ছেলেরে বললে তো নিজেই যাইতো, এমনি কইরা ওরে তুলে নিল ক্যান?”

করিমন স্বামীকে হারান ২০০৬ সালে। দুই ছেলে তখনও ছাত্র। স্বামী হারিয়ে দুই ছেলেকে ঘিরেই জীবন চালিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। বড় ছেলে রবিউল সহকারী পুলিশ সুপার হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি ফেরে তার জীবনে। কিন্তু ২০১৬ সালে রবিউল মারা যাওয়ার পর শামসই তার জীবনের একমাত্র অবলম্বন।

শামসের খবরের জন্য কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছিলেন, “আল্লা আমার স্বামী নিছ, এক সন্তানরে নিছ। আমার এই সন্তানকে বুকে ফিরায় দাও আল্লাহ, আমি আর কিচ্ছু চাই না। আমার সন্তান ঘরে থাকব, আমি ওর মা ডাক শুনবো।”

শামসের মামাত ভাই ফারুক হোসেন রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফুফু এখন অনেকটা চুপচাপ। হয়ত শরীরে আর শক্তি নাই। বারবারই জানতে চাচ্ছেন- আমার ছেলে কোথায়?

“এই প্রশ্নের আমরা কী জবাব দেব বলেন? আমরা নানাভবে তারে সান্ত্বনা দিচ্ছি। কিন্তু তিনিও বুঝে গেছেন, তাকে মিথ্যা সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে।”