আসামির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদান মেলেনি’ জানিয়ে বিচারক তাকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছিলেন।
Published : 12 Mar 2023, 05:51 PM
প্রাইভেটকারের চাপায় ডিএমপি ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মনোরঞ্জন হাজংয়ের পা হারানোর মামলায় আসামির অব্যাহতির সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য ‘রিভিশন’ আবেদনে যাচ্ছে বাদীপক্ষ।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন ‘আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদান না পেয়ে’ গত ৭ মার্চ সাঈদ হাসান সাব্বিরকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছিলেন।
মহুয়া হাজং রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একজন বিচারপতির ছেলে হওয়ায় অন্যায়ভাবে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে আইনজীবী আমিনুল গণী টিটোর মাধ্যমে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করব।”
আসামির পক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী নজিব উল্ল্যাহ হিরু, বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান মামুন ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জুবায়ের গত ৭ মার্চ শুনানিতে অংশ নেন। তারা আসামির অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন। জামিনে থাকা আসামি সাব্বিরও তখন আদালতে ছিলেন।
আসামির পক্ষে সেদিন শুনানিতে বলা হয়, ভুক্তভোগী মনোরঞ্জন মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর আসামি ঠিক দিকেই ছিলেন। ভুক্তভোগী উল্টোদিকে থাকায় এ দুর্ঘটনার দায় আসামির ওপর আসতে পারে না। আর আসামির গাড়ি চালানোর লাইসেন্স রয়েছে।
মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জন হাজং ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বনানী চেয়ারম্যানবাড়ীর ইউলুপে। এ সময় একটি প্রাইভেটকার তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে মারাত্মক আহত হন মনোরঞ্জন।
পরের দিন মনোরঞ্জনের ডান পায়ের গোড়ালি কেটে ফেলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু সংক্রমণ ছড়ালে পাঁচ দিন পর ৮ ডিসেম্বর আবারও অস্ত্রপচার করে ডান পাটি হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়।
দুর্ঘটনার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মহুয়া হাজং কয়েকবার থানায় গেলেও মামলা নেওয়া হচ্ছিল না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ ও সংবাদ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় সমালোচনা হলে ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর মহুয়ার মামলা নেয় বনানী থানা পুলিশ। কিন্তু সেখানে আসামির নাম ছিল না। পরে তদন্ত করে সাঈদ হাসান সাব্বিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
প্রাইভেটকারটির চালক সাঈদ হাসান মামলার দুদিন আগে একই থানায় একটি জিডি করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, মনোরঞ্জন উল্টোপথে মোটরসাইকেল চালিয়ে এসে তার প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দেন। এতে তিনি ও তার স্ত্রীর ‘প্রাণহানির মত’ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। উল্টোপথে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য দুর্ঘটনার দায় ‘মনোরঞ্জনের ওপরই বর্তায়’।
ওই জিডি প্রসঙ্গে ভুক্তভোগীর মেয়ে সার্জেন্ট মহুয়া সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “তিনি (সাঈদ) আমার বাবাকে গাড়ি চাপা দিয়েছেন, আবার তিনিই উল্টো জিডি করেছেন। তিনি যে কতটা প্রভাবশালী, তা আরেকবার প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন।”
পুরনো খবর
অবশেষে সেই সার্জেন্টের মামলা নিল পুলিশ
থানা মামলা নিচ্ছে না, অভিযোগ পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়ার
সার্জেন্ট মহুয়ার মামলা: দোষ কার, ‘সেই তদন্ত করে ব্যবস্থা’
নারী সার্জেন্টের মামলা না নেওয়ায় এইচআরএফবির নিন্দা
সার্জেন্টের বাবাকে গাড়িচাপা: দুদিন আগে চালকের জিডি নিলেও মামলায় তার নাম নেই