“একজন প্রবীণ আইনজীবী ভোট দিতে অনিয়ম করলে সেখানে হট্টগোলের সৃষ্টি হয় এবং ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।”
Published : 29 Feb 2024, 02:07 PM
অনিয়মের অভিযোগ ও গণ্ডগোলে ঢাকা বারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শুরুর পর সব নির্বিঘ্নেই চলছিল। বেলা ১২টার দিকে একদল আইনজীবী ‘জাল ভোট জাল ভোট’ বলে হইচই শুরু করেন। এরপর ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এ পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। বেলা সোয়া ১২টায় ভোটকেন্দ্রের প্রবেশ পথ বন্ধ দেখা যায়। বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী দুলাল মিত্র এ সময় ভোট দিতে না পেরে চেম্বারে ফিরে যান। অথচ দুপুরের বিরতির নির্ধারিত সময় বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত।
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সাদা প্যানলের প্রচার কর্মী আজাদ রহমান বলেন, “দুপুরের বিরতির পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হবে।” কিন্তু বেলা আড়াইটার পরেও প্রবেশ পথ বন্ধ দেখা যায়।
আইনজীবী জয়ন্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, “একজন প্রবীণ আইনজীবী ভোট দিতে অনিয়ম করলে সেখানে হট্টগোলের সৃষ্টি হয় এবং ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।”
জটিলতা মেটাতে এ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বারের সাবেক কয়েকজন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বৈঠকে বসেছেন বলে আইনজীবীরা জানান।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের কার্যকরী কমিটি নির্বাচনে দুই দিনের ভোটগ্রহণ শুরু হয় বুধবার সকাল ৯টায়। বৃহস্পতিবার বিকল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলার কথা ছিল।
এবারের নির্বাচনে ভোটার আছেন ২১ হাজার ১৩৭ জন। তাদের মধ্যে চার হাজার ২৩০ আইনজীবী প্রথম দিন ভোট দেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ (সাদা প্যানেল) থেকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবদুর রহমান হাওলাদার। তার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন মো. আনোয়ার শাহাদাত শাওন।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল (নীল প্যানেল) থেকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খোরশেদ মিয়া আলম। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
সাদা প্যানেল থেকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে আবুল কালাম মোহাম্মাদ আক্তার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. ওমর ফারুক, জ্যেষ্ঠ সহসাধারণ সম্পাদক পদে মাসরাত আলী, সহসাধারণ সম্পাদক পদে আসাদুজ্জামান, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে হুমায়ুন কবির, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মনিরা বেগম, অফিস সম্পাদক পদে সরোয়ার জাহান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে প্রদীপ চন্দ্র সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. ওয়াকিলুর রহমান এবং তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে সৈয়দা ফরিদা ইয়াছমিন ভোট করছেন।
সদস্য পদে এই প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছেন এমদাদুল হক, হাফিজ আল মামুন, কাজী হুমায়ুন কবির, মাহমুদুল হাসান, আবদুর রহমান মিয়া, মো. ইমরান হাসান, মো. মোহসিন উদ্দিন, মোহাম্মাদ মইন উদ্দিন, শাহিন আহমেদ ও সুমন আহমেদ।
নীল প্যানেল থেকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে আবদুর রাজ্জাক, সহসভাপতি পদে সহিদুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ পদে আবদুর রশীদ মোল্লা, জ্যেষ্ঠ সহসাধারণ সম্পাদক পদে জহিরুল হাসান, সহসাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ মো. মইনুল হোসেন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে মাহবুব হাসান, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে নার্গিস পারভীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নূরজাহান বেগম, দপ্তর সম্পাদক পদে আনোয়ারুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মোবারক হোসেন এবং তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে মো. মাজহারুল ইসলাম প্রার্থী হয়েছেন।
এই প্যানেলের আলী মোরতুজা, গাজী তানজিল আহমেদ, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. আসিফ, জাবেদ হোসেন, খলিলুর রহমান, মো. সামসুজ্জামান, মোহাম্মাদ আলী, মুক্তা বেগম ও রেজাউল হক সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গত বছর ঢাকা বারের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে দ্বিতীয় দিন ভোট বর্জন করে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল। ফলে সভাপতি পদে মিজানুর রহমান মামুন, সাধারণ সম্পাদক পদে খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জুবায়েরসহ পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা।