লঞ্চ দুটির ঢাকা-বেতুয়া (চরফ্যাশন) রুটে চলাচলের অনুমোদন ছিল।
Published : 11 Apr 2024, 07:30 PM
ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দুর্ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি ঘটনা সংশ্লিষ্ট দুই লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।
ঈদের দিন বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে ঘটা এ দুর্ঘটনার পর বিকালে নৌযান পরিচালনা তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এমভি ফারহান-৬ ও এমভি তাসরিফ-৪ এর রুট পারমিট তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করে।
দুর্ঘটনার জেরে এমভি ফারহান-৬ এর রুট পারমিট বাতিলের তথ্য দেন সংস্থাটির নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক জয়নাল আবেদীন। এ ঘটনায় এমভি তাসরিফ-৪ এর রুট পারমিটও বাতিল করা হয়েছে।
লঞ্চ দুটি ঢাকা-বেতুয়া (চরফ্যাশন) রুটে চলাচল করে বলে জানান তিনি।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিআইডব্লিউটিএ এর পরিচালক (ক্রয় ও সংরক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলামকে। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আজগর আলী এবং বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম খান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
ঈদের দিন বেলা ৩টার দিকে সদরঘাটে এ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। এক দম্পতি ও তাদের তিন বছরের কন্যা সন্তান আঘাত পেয়ে পন্টুনেই মারা যান। মৃতদের মধ্যে বাকি দুইজন পুরুষ, তাদের মৃত্যুও হয় ঘটনাস্থলেই। পরে তাদের লাশ মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতরা হলেন-পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে মাইশা (৩); পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) এবং ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, এমভি তাসরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ রশি দিয়ে সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে এমভি ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়।
ওই রশির আঘাতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। কেউ কেউ পাশে থাকা লঞ্চের সঙ্গে বাড়িও খায়।
নৌপুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই যাত্রীরা পন্টুনে ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, ছিঁড়ে যাওয়া রশির আঘাতেই তাদের মৃত্যু হয়।”
ঘটনার কিছু সময় পর মিটফোর্ড হাসপাতালে দুর্ঘটনার কয়েকটি ছবি দেখিয়ে নৌ পুলিশের এসআই কুমারেশ ঘোষ বলেন, “এক লঞ্চকে আরেক লঞ্চ ধাক্কা দেয়। ওই ধাক্কায় লঞ্চের মোটা রশি ছিঁড়ে মানুষের গায়ে ধাক্কা লেগেছে। তাতেই ঘটেছে হতাহতের ঘটনা।”