মামলা তুলে না নিলে অফিস যাওয়া-আসার পথে ক্ষতি বা প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আয়ানের বাবা।
Published : 28 Jan 2024, 07:06 PM
খতনা করতে এসে মারা যাওয়া শিশু আয়ান আহমেদের বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলা তুলে না নিলে অফিস যাওয়া-আসার পথে ক্ষতি বা প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আয়ানের বাবা মো. শামীম আহমেদ।
রোববার ঢাকার শাহবাগ থানায় তিনি এই জিডি করেন।
সুন্নতে খতনা করাতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর আয়ানকে ঢাকার সাঁতারকুল এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। সেখানে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। পরে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত ৭ জানুয়ারি সেখানে মৃত্যু হয় শিশুটির।
আয়ানের বাবা শামীম আহামেদ পরে বাড্ডা থানায় মামলা করেন। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সাইদ সাব্বির আহমেদ, সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক তাসনুভা মাহজাবিন,অজ্ঞাতনামা পরিচালকসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয় মামলায়।
রোববার আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিবেদনে আয়ানের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করে বলা হয়নি। শিশুটির মৃত্যুর জন্য সরাসরি কাউকে দায়ীও করা হয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে।
এদিনই শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেন আয়ানের বাবা মো. শামীম আহমেদ।
সাধারণ ডায়েরির আবেদনে বলা হয়েছে, রোববার হাই কোর্টে রিট পিটিশনের শুনানিতে এসেছিলেন তিনি। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বের হয়ে বেলা পৌনে একটার দিকে হাই কোর্ট মাজারগেট থেকে হেঁটে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে আসছিলেন তিনি। এ সময় বাড্ডা থানায় করা মামলার আসামি সাইদ সাব্বির আহম্মেদ, তাসনুভা মাহজাবিন এবং ইউনাইটেড হাসপাতালের অজ্ঞাতনামা আসামিদের পক্ষের কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার পথরোধ করে। এ সময় তারা মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়।
আবেদনে শামীম বলেছেন, “আমি যদি মামলা তুলে না নেই তবে আমার অফিসে যাওয়ার সময় যেকোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ক্যান্টিনের সামনে ওই মামলার আসামিদের পক্ষে তিনজন অজ্ঞাতনামা বিবাদী একইভাবে আমাদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিবাদীরা যেকোনো সময় আমার ও আমার পরিবারের যে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে।”
শাহবাগ থানার ওসি মো. মোস্তাজিরুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আয়ানের বাবা আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
এ বিষয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাক আরিফুল হক বলেন, “হুমকির ঘটনার কোনো সত্যতা নেই। মামলার তদন্তে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি। সেক্ষেত্রে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার বিষয়টি একেবারেই অবান্তর।”
আরও পড়ুন:
আয়ানের এমন মৃত্যু কেন? প্রতিবেদনে যা জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর