এক আগুনে মা-বাবা দুজনকে হারাল দরিদ্র পরিবারের ৫ বছরের শিশুটি।
Published : 17 Aug 2023, 09:30 PM
শরীরের ২৫ শতাংশ জুড়ে আগুনের ক্ষত নিয়ে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বর্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে কাতরাচ্ছে ৫ বছর বয়সী আফসানা।
শিশুটির মা অগ্নিদগ্ধ হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে মারা যান, এরপর বিকালে মারা যান বাবা।
বাবা-মার মৃত্যুর খবর শিশুটির কাছে লুকিয়ে রেখেছেন তার স্বজনরা। দরিদ্র পরিবারটির আরও উৎকণ্ঠা, এই শিশুর চিকিৎসার অর্থ সংস্থান নিয়ে।
স্ত্রী মুক্তা খাতুন (৩০) ও মেয়ে আফসানাকে নিয়ে বেড়াতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে গত রোববার গ্যাসের লিকেজ থেকে লাগা আগুনে সপরিবারে দগ্ধ হন আতাহার আলী (৩৫)।
রাত ২টার দিকে ছোলা গরম করতে আগুন জ্বালতেই পুরো বাড়িতে তা ছড়িয়ে পড়ে। দগ্ধ হন বাড়িতে থাকা পাঁচজন।
মুক্তার বাবা আলতাফ সিকদার ও মা মর্জিনা বেগমও দগ্ধ হন। সবাইকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার পর আলতাফ ও মর্জিনা ছাড়া পেলেও ভর্তি ছিলেন আতাহার, মুক্তা ও আফসানা।
চার দিন পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এরপর বিকালে আতাহারও মারা যান।
বার্ন ইনিস্টিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, আতাহারের শরীরের ৫৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
মুক্তার মামা মাহাবুব রহমান হাসপাতালে পরিবারটির দেখভাল করছেন। তিনি জানান, আফসানার নানা-নানীর ক্ষতও এখনও পুরোপুরি সারেনি, তবে তাদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
মাহাবুব বলেন, “এদিকে আফসানা বারবারই জানতে চাইছে, বাবা-মা কোথায়? তারা কেন আসে না? এটা-ওটা দিয়ে তাকে ভুলিয়ে রাখছি, আর লুকিয়ে লুকিয়ে চোখের পানি ফেলছি।”
জুরাইন মাদবর বাজার সলিমুল্লাহ রোডের মান্নান মাস্টারের চতুর্থ তলা বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকেন আলতাফ। তিনি ঘুরে ঘুরে ছোলা বিক্রি করেন। সেই ছোলা গরম করতে গিয়েই আগুন লেগেছিল।
মাহাবুব বলেন, দরিদ্র পরিবারটির চিকিৎসা ব্যয় চালাতে স্বজনরা হাত বাড়িয়েছেন, কিন্তু সেটিও খুবই অপর্যাপ্ত।
“এখন সবাই চিন্তায় ছোট্ট আফসানাকে নিয়ে,” বলেন তিনি।