প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের (গোয়েন্দা) উপ-কমিশনার মশিউর রহমান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, বুধবার তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
“আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি, বেশ কিছু তথ্য পাচ্ছি। মাইনুল অন্যদের সঙ্গে (১১০টি মামলা আপসের বিষয়ে) মোবাইলে যোগাযোগ রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।”
তদন্তের প্রয়োজনে এর বেশি কিছু জানাতে চাননি এই কর্মকর্তা। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৬ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান (৩৭) এবং সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসানকে (৪২) গ্রেপ্তারের খবর জানিয়েছিলেন।
গ্রামীণ টেলিকমের প্রায় দুইশ শ্রমিক-কর্মচারী তাদের কোম্পানির লভ্যাংশ হিসেবে পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা আদায়ে আদালতে ১১০টি মামলা করেছিলেন।
কিন্তু কর্মীদের দাবি মেনে পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলে সব মামলা প্রত্যাহার করা হয় বলে জানিয়েছিলেন শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের আইনজীবী ইউসুফ আলী।
কিন্তু ওই ১১০টি মামলা প্রত্যাহারের ঘটনায় ‘বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগ এনে মিরপুর থানায় গত ১ অগাস্ট মামলা করেন ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান।
সেই মামলায় গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের ওই তিন নেতাকে গ্রেপ্তারের কথা জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ গত ৬ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “শ্রমিকদের পক্ষ করা এই মামলা তড়িঘড়ি করে অনেকটা গোপনে প্রত্যাহার, শ্রমিকদের অর্থ প্রদান এবং প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা লক্ষ্য করা যায়।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম এবং গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের মধ্যে যে চুক্তি হয়, সে অনুযায়ী চলতি বছরের ১০ মে ঢাকা ব্যাংক গুলশান শাখায় একটি সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। ২০১০ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রতি বছর কোম্পানির মোট লভ্যাংশের ৫ শতাংশ টাকা হারে কোম্পানি থেকে এই অ্যাকাউন্টে প্রায় ৪৩৭ কোটি টাকা জমা হয়।
“পরে এই টাকা ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি মাইনুল হাসানের যোগসাজশে অন্য দুটি ব্যাংকে স্থানান্তর করে ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ইউনিয়নের নিয়োজিত আইনজীবী অযৌক্তিক ও অতিরঞ্জিতভাবে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ফি-পারিতোষিক হাতিয়ে নেয়।”
পুরনো খবর: