মেট্রোরেল উদ্বোধন ২৮ ডিসেম্বর

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশে প্রথম পর্যায়ে ছুটবে মেট্রোরেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2022, 01:27 PM
Updated : 15 Dec 2022, 01:27 PM

সব কাজ শেষে দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালুর জন্য প্রস্তুত; আগামী ২৮ ডিসেম্বর ঢাকা নগরীতে বহুল আকাঙ্খিত নতুন এ গণপরিবহন ছুটতে শুরু করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন। 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপ কমিটির সভায় এ কথা জানান।

তিনি বলেন, "২৮ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থেকে মেট্রোরেলের দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন করবেন।"

মেট্রোরেল যুগে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর জানিয়েছিল মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

সেদিন চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালুর জন্য শেষ সময়ের কাজ গোছানোর কার্যক্রম চলছে বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়।

উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষের পর সাধারণের চলাচলের জন্য বৈদ্যুতিক এ ট্রেন চলাচল শুরুর কথা সেদিন জানানো হয়। প্রথম দিকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার পথে ছুটবে মেট্রোরেল।

জাপান সরকারের অর্থায়নে ঢাকাবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ডিএমটিসিএল।

ডিএমটিসিএল জানায়, উদ্বোধনের পর পুরোদমে চলবে না ঢাকার প্রথম এই মেট্রোরেল। প্রথম সপ্তাহে শুধু সকালে ও বিকালে চলবে। ধীরে ধীরে চলার সময় বাড়বে।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের স্টেশন হবে নয়টি। এর ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা, সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি ছয় বগির ট্রেন সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে।

প্রথম দিকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের এই পথে মেট্রোরেল সময় নেবে ২০ মিনিট। পূর্ণমাত্রায় চালু হলে এই সময় কমে আসবে ১৬-১৭ মিনিটে।

গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মেট্রোরেল নির্মাণে জাপানের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে সরকার। পরের বছর প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়।

এরপর ধাপে ধাপে কাজ এগিয়েছে অগ্রাধিকারভিত্তিক এ প্রকল্পের; বাড়ানো হয়েছে এর রুটও।

কোভিড মহামারীর মধ্যে কাজে ধীরগতির কারণে সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক এ মেগাপ্রকল্পের বাস্তবায়নের সময় কিছুটা পিছিয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বর নির্ধারণ করে বাস্তবায়নকারী কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)।

রুট বাড়ানো ও ব্যয় বাড়ার আগে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্থাপনে চলমান এ প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।

এরপর কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল এগিয়ে নেওয়ায় মোট ব্যয় বেড়ে হয় প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানান, দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এবং এর পরে কমলাপুর পর্যন্ত অংশ চালু করা হবে।

কর্মকর্তারা জানান, উদ্বোধনের সময় ঘোষণার হওয়ার পর ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হবে। প্রথমদিকে কেবল স্টেশনের কাউন্টার থেকে এমআরটি পাস ইস্যু করা হবে এবং সেটা রিচার্জ করা যাবে।

এছাড়া স্টেশনের কাউন্টার কিংবা টিকেট বিক্রয় মেশিন থেকে নির্দিষ্ট যাত্রার টিকেট (সিঙ্গেল জার্নি টিকেট) কেনা যাবে।

এম এন ছিদ্দিক জানান, উদ্বোধনের আগেই ৬ বগির ১০টি ট্রেন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রাখা হবে। ব্যাকআপ হিসেবে আরও দুটি ট্রেন প্রস্তুত থাকবে।