নর্থ সাউথের ট্রাস্টি বেনজীরকে কেন জামিন নয়: হাইকোর্ট

দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে রুলের ব্যাখ্যা চেয়ে আগামী ২৫ অগাস্ট পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছে আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2022, 11:36 AM
Updated : 10 August 2022, 11:36 AM

ক্যাম্পাসের জমি কেনার নামে ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য বেনজীর আহমেদকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে হাই কোর্ট।

বুধবার তার জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এই রুল জারি করে।

আগামী ২৫ অগাস্ট ওই রুলের ওপর পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছে আদালত। তার আগে মামলার বিবাদী দুর্নীতি দমন কমিশনকে রুলের ব্যাখ্যা দিতে বলেছে আদালত।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাইদ আহমেদ রাজা, দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে গত ২ অগাস্ট একই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের অপর দুই সদস্য এম এ কাশেম ও রেহানা রহমানকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত।

এরপর গত ৮ অগাস্ট ট্রাস্ট্রি বোর্ডের আরেক সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহানের জামিন প্রশ্নে রুল দিয়ে আগামী ২৩ অগাস্ট শুনানির তারিখ দিয়েছে আদালত।

অর্থ আত্মসাতের এই মামলায় গত ২২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্যের করা আগাম জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে তাদের পুলিশে সোপর্দ করে হাই কোর্ট।

এরা হলেন- এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান।

পরে তারা কারাগার থেকে জামিন চেয়ে আবেদন করলে গত ৩০ জুন শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে দেয়।

ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।

আসামিরা হলেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ডের চার সদস্য- এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।

মামলার এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন।

পরবর্তীতে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা তুলে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরে নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ তুলে আত্মসাৎ করেন।

অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয় গোপনের জন্য উক্ত অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অপরাধ করেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

Also Read: নর্থ সাউথের ৪ ট্রাস্টির জামিন নাকচ

Also Read: জামিন নয়, নর্থ সাউথের চার ট্রাস্টিকে পুলিশে দিল হাই কোর্ট

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ অনুযায়ী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।