নর্থ সাউথের ৪ ট্রাস্টির জামিন নাকচ

ক্যাম্পাসের জমি কেনার নামে ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্যের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2022, 11:25 AM
Updated : 30 June 2022, 11:25 AM

এরা হলেন- এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর  জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন নাকচ করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত ২০ জুন এ চার আসামির জামিনের বিষয়ে শুনানি হয়। পরে অধিকতর শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে আদালত।

এদিন আসামিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী কাজী নজিব উল্যাহ হিরু, শাহিনুর ইসলাম অনিসহ কয়েকজন। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল, আহমেদ আলী সালাম।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

এর আগে গত ২২ মে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগাম জামিন আবেদন করেন এ আসামিরা।

তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে সেদিন পুলিশের হাতে তুলে দেয় হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে শাহবাগ থানা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের নিম্ন আদালতে হাজির করতে বলা হয়।

নির্দেশনা অনুযায়ী পরদিন আদালতে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।

মামলার আসামিরা হলেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ডের চার সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।

মামলার এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন।

পরবর্তীতে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা তুলে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরে নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ তুলে আত্মসাৎ করেন।

অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ে গোপনের জন্য উক্ত অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অপরাধ করেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ অনুযায়ী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

আরও খবর