ঢাকার কল্যাণপুর জলাধারের এলাকায় ‘হাইড্রো ইকো পার্ক’ নির্মাণ কেউ আটকাতে পারবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সব বাধা কাটিয়ে এ বিষয়ক সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হবে।
বুধবার দুপুরে গাবতলী বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কল্যাণপুর ‘রিটেনশন পন্ড’ এলাকা হিসেবে পরিচিত ওই জলাধার পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “পার্ক তৈরির জন্য এখানে রিটেনশন পন্ডের খননকাজ শুরু হয়েছে। এটা করতে গিয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এখানে অনেকে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন। এগুলো উচ্ছেদ করা হবে।”
এ পার্কে শিশু, নারী ও বয়স্ক সবার জন্য সুবিধা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখানে আমরা সিটি ফরেস্ট গড়ে তুলব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঢাকা শহরে হাতিরঝিল প্রকল্প করে দিয়েছেন। কল্যাণপুরে আমরা তেমনি ন্যাচারবেজড ইকো পার্ক নির্মাণ করব।”
জলাধার এলাকা পরিদর্শনের সময় ‘উচ্ছেদ অবৈধ’ শ্লোগান দিয়ে সেখানে বিক্ষোভ করছিলেন কিছু ব্যক্তি। তারা উচ্ছেদ বিরোধী ব্যানার, প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন, জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ দাবি করছিলেন।
এসময় মেয়র আতিক বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি দৃঢ় কণ্ঠেই বলেন, এখানে যত বাধাই আসুক ইকো পার্ক নির্মাণ করা হবে।
ঢাকার গাবতলীর গৈদারটেক এলাকায় বেরিবাঁধ লাগোয়া এ জলাধার কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড এলাকা হিসেবে পরিচিত। ঢাকা ওয়াসা এ জলাধারের জন্য ৫৩ একর জায়গা উত্তর সিটিকে বুঝিয়ে দেয়। এছাড়া পাশে করপোরেশনেরও ৫৩ একর জমি রয়েছে।
এছাড়া এখানে আরও ১১৭ একর বিএডিসির জমি রয়েছে। বিশাল এ জলাধারের উত্তরে গাবতলী বাস টার্মিনাল, পশ্চিমে বেড়িবাঁধ সড়ক, দক্ষিণে আদাবর এবং পুর্বদিকে গৈদারটেক এলাকা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মিরপুর, ধানমণ্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার পানি এসে গাবতলীর এ জলাধারে (রিটেনশন পন্ডে) জমা হয়। সেই পানি পাম্পের মাধ্যমে অপসারণ করা হয় বলে উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান।
তারা জানান, এখন অবৈধ দখলের কারণে পুরো পানির আধার ভরাট করে বহুতল ভবন, আবাসন প্রকল্প ও বিভিন্ন স্থাপনা করা হয়েছে। মোট ১৭১ একর অধিগ্রহণ করা জায়গার বেশির ভাগ অংশ অবৈধ দখলে।
বুধবার মেয়রের পরিদর্শনের সময় বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, ঢাকা ওয়াসা জলাধারটির জন্য সিটি করপোরেশনকে যে জমি বুঝিয়ে দিয়েছে তা অধিগ্রহণ করা হয়নি। এখানে প্রতি শতাংশ জমির জন্য ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়। এ টাকায় এখানে কেউ জমি দেবে না। সিটি করপোরেশন জমি নিলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এসময় মেয়র বলেন, ১৯৮৯ সালে ঢাকা ওয়াসা এসব জমি অধিগ্রহণ করেছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণের টাকাও দেওয়া হয়েছে। সেসময় ৫২ একর জমি ওয়াসা উদ্ধার করতে পারেনি। ওই জমিতে যারা ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করছে, তারাই এখন আবার ক্ষতিপূরণের টাকা চা্ইছে।
“উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। যারা দাবি করছেন অধিগ্রহণের টাকা পাননি তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগাযোগ করুন।”
মেয়র জানান, উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে এরইমধ্যে ২০ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে।