তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ৯ এপ্রিল তারিখ রেখেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. রাশিদুল।
Published : 05 Mar 2023, 04:52 PM
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ফের ব্যর্থ হয়েছে তদন্তের দায়িত্বে থাকা র্যাব।
তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ৯ এপ্রিল নতুন তারিখ রেখেছেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. রাশিদুল আলম।
আলোচিত এ মামলার তদন্ত কাজ গড়িয়েছে ১১ বছরে। প্রতিবেদন জমা দিতে এ নিয়ে ৯৬ বার সময় নিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
রোববার সেই প্রতিবেদন দেওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট খন্দকার শফিকুল আলম তা জমা দিতে পারেননি। তাই নতুন দিন ঠিক করে দেন বিচারক।
এর আগে ৪ জানুয়ারিতে বিচারক প্রতিবেদন জমা দিতে ৫ মার্চ তারিখ দিয়েছিলেন। বারবার প্রতিবেদন দিতে না পারায় এর আগে অসন্তোষও প্রকাশ করেছিল দুটি আদালত।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাছরাঙার বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।
সেই রাতে সেই ফ্ল্যাটে তারা দুজনের সঙ্গে ছিল তাদের একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সী মাহিন সরওয়ার মেঘ। তাকে উদ্ধৃত করে পুলিশ তখন জানিয়েছিল, খুনি ছিল দুজন।
আলোড়ন তোলা এই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর বছরের পর বছর গড়ালেও খুনিরা অধরাই থেকে গেছে।
হত্যাকাণ্ডের পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের রোমান। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।
প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নামে। চারদিন পর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।
তারা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র্যাব। কিন্তু এতদিনেও এ হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়নি।
কিছুদিন আগে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে স্মারকলিপি দেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ডিআরইউর স্মারকলিপি আমি র্যাবের ডিজিকে এখনই পাঠিয়ে দিচ্ছি। তাড়াতাড়ি একটা কিছু যেন তারা জানান, সেই নির্দেশনা তাদের দেওয়া হবে।”
এরপর র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা ‘পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে’ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে অগ্রগতির কোনো খবর তার কাছ থেকেও মেলেনি।
তিনি বলেছিলেন, “এখনও তদন্ত প্রতিবেদন বা চার্জশিট দেওয়ার মতো কোন তথ্য-উপাত্ত আমরা পাইনি। আমরা আদালতে নিয়মিত প্রতিবেদন দিয়ে বিষয়টি অবগত করছি,”
তদন্তের প্রয়োজনে বিভিন্ন আলামত দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে র্যাবের মুখপাত্র বলেছিলেন, “সর্বোচ্চ গুরুত্ব এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্তের কাজ চলছে।”
পুরনো খবর-
সাগর-রুনি হত্যা: তদন্ত প্রতিবেদন জমা হল না ৯২তম তারিখেও
সাগর-রুনি খুন: ‘না পারলে তারা বলুক, সরি’
সাগর-রুনি হত্যা: ১১ বছরেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি
সাগর-রুনি হত্যা: রহস্য উদঘাটনে আদালতের নির্দেশনা দাবি সাংবাদিকদের
সাগর-রুনি হত্যা: তদন্তকারীদের ‘পেশাদারিত্বে’ আর ভরসা পাচ্ছে না পরিবার