নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে আশপাশের সব মার্কেট বন্ধ

পুলিশ বলছে, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলে রাস্তা খুলে দেওয়া হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2023, 08:44 AM
Updated : 15 April 2023, 08:44 AM

ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব পড়েছে আশপাশের প্রায় অর্ধশত মার্কেটে।

ঈদের বাজারে ছুটির দিন শনিবার যখন বেচাকেনায় সরগরম থাকার কথা ছিল, তখন দুপুর পর্যন্ত এসব মার্কেট বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।

এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, একে তো আগুন, তারউপর রাস্তা বন্ধ, ক্রেতা না আসায় তারা মার্কেট বন্ধ রেখেছেন।

রাজধানীতে ঈদের আগে বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়ার পর শনিবার সকালে আগুন লাগে নিউ সুপার মার্কেটের তিন তলা বিপণি বিতানে।

সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ভেতরে দোকানগুলোতে পোশাক পুড়ে ধোঁয়া বের হচ্ছিল দুপুরেও।

সেখানে আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন বাহিনী। সেই কাজ নির্বিঘ্ন করতে মিরপুর রোডসহ আশপাশের সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।

ওই এলাকায় মূল নিউ মার্কেটসহ আশেপাশে প্রায় অর্ধশত মার্কেট রয়েছে। এসব মার্কেটে রয়েছে হাজার হাজার দোকান।

যে মার্কেটে আগুন লাগে, তার ঠিক উত্তরে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, দক্ষিণে লাগোয়া মূল নিউ মার্কেট। পশ্চিমে লাগোয়া কাঁচা বাজার মার্কেট।

এছাড়া বিপরীতে মিরপুর রোডের পূর্ব দিকে রয়েছে গাউছিয়া, চাঁদনী চক, নূর ম্যানশনসহ কয়েকটি মার্কেট। সড়কের পূর্ব পাশে উত্তর দিকে রয়েছে আধা পাকা ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেট।

Also Read: আগুন ‘নিয়ন্ত্রণে’, তবে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন নিউ সুপার মার্কেট

বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শন শেষে অগ্নি ঝুঁকিতে থাকা মার্কেট হিসাবে চিহ্নিত করে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছিল।

ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটের উত্তর দিকে গ্লোব শপিং মল, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, ইয়াকুব সুপার মার্কেট, নূর জাহান সুপার মার্কেট, গোল্ডেন সুপার মার্কেট, নেহার ভবন শপিং সেন্টার, প্রিয়াঙ্গন মার্কেটে প্রায় সব দোকানই বন্ধ রয়েছে। নিউ এলিফ্যান্ট রোডের কিছু কিছু দোকান-মার্কেট খুললেও দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা ছিল না।

তবে নীলক্ষেতে বই মার্কেট খোলা রয়েছে।

নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগার পর ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটের জালাল নামে এক শাড়ি দোকানি ছুটে আসেন। তিনি বলেন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় এবং বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তাদের দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে।

“পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ঈদের ব্যবসা বুঝে কখন দোকান খোলা হবে, তা সবার সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে,” বলেন তিনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগের সপ্তাহে যখন তাদের বিক্রি বেশি হওয়ার কথা, তখন দোকান বন্ধ রাখতে হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুতই রাস্তা খুলে দেওয়া হবে। তখন আশপাশের মার্কেটগুলোর দোকানিরা দোকান খুলতে পারবেন।

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার জয়নুল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফায়ার সার্ভিস বাইরে থেকে পানি আনছে, এজন্য রাস্তা পরিস্কার রাখতে হচ্ছে। তারা ক্লিয়ারেন্স দিলেই রাস্তা খুলে দেওয়া হবে।”

Also Read: ‘সব শেষ হয়্যা যাইতেছে, কিছু করার পারতাছি না’

এদিকে এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতার সন্দেহ করছেন ব্যবসায়ীরা।

নুরজাহান সুপার মার্কেটের মা গার্মেন্টসের মালিক মো. সোহাগ বলেন, “পরপর দুটি মার্কেটে আগুন ব্যবসায়ীদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। আগুন নিয়ে নানা সন্দেহ আর প্রশ্ন সবার মনে।”

বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেট দুটিতেই ভোরে আগুন লাগার দিকটি দেখিয়ে নিউ মার্কেটের ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী সোলায়মান মিয়া বলেন, “এই আগুন লাগায় দেওয়া হইছে বলে সন্দেহ করে সবাই। না হলে বারবার ভোরবেলায় যখন কেউ মার্কেটে থাকে না, তখন এভাবে আগুন কেন লাগবে?”

বার বার আগুন লাগার পেছনে অন্য কিছু রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকও আহ্বান জানিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এখনও তেমন কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

Also Read: বারবার কেন অগ্নিকাণ্ড, খতিয়ে দেখুন: ফায়ার সার্ভিস ডিজি