টানা কয়েকদিনের ভারি বর্ষণের পর ঢাকায় রোদের দেখা মিলেছে। তবে ঢাকার বাইরের বৃষ্টি থামেনি; এদিন দেশে সর্বোচ্চ ৩০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে উত্তর-পূর্বের জেলা সিলেটে।
শনিবার আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতির মধ্যে বৃষ্টি কমে আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে দেশে মেঘমুক্ত আকাশ দেখা যাবে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এক সপ্তাহের মাথায় আরেক দফা বৃষ্টির দাপট দেখা যেতে পারে।
টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সিলেট নগরীর রাস্তাঘাট-পাড়া-মহল্লা-বাসাবাড়িতে। পানি ঢুকে পড়েছে সরকারি-বেসকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাদামবাগিছা এলাকার সাহেদা বেগম বলেন, “একটু ভারি বৃষ্টি হলে বাসার ভেতর পানি ঢুকে। এ জন্য কিছু দিন পর পর বাসার জিনিসপত্র উপরে তুলতে হয়। বৃষ্টিতে আজ ভোরে বাসার ভেতরে পানি ঢুকে। প্রায় হাঁটু সমান পানি; তখন সবাই ঘুম থেকে জেগে জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে। যদিও খাটগুলো ছিল পানির নিচে।
“এভাবে পানি ওঠার কারণে আমাদের রান্নাও বন্ধ থাকে। আর বাসার অনেক জিনিস নষ্ট হয়। এই এলাকার অনেকের বাসায় পানি উঠেছে।”
জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, “বর্ষার শেষ সময়ে এসে অক্টোবরে সপ্তাহ ধরে যে ভারি বর্ষণ হচ্ছিল তা কমে আসছে। মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকার পাশাপাশি লঘুচাপের প্রভাবে এমন অতি ভারি বর্ষণ হচ্ছিল।
“আজ (শুক্রবার) থেকে সবখানে বৃষ্টি কমে আসছে, রাজধানীসহ কোথাও কোথাও মেঘমুক্ত আকাশ রয়েছে। দুদিনের মধ্যে সবখানে বৃষ্টি কমে যাবে।”
তবে ১২/১৩ অক্টোবরের পর আরেক দফা বৃষ্টির দাপট শেষে বর্ষার বিদায় ঘটবে বলে জানান এ আবহাওয়াবিদ।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এই অক্টোবরেই ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৪৭৬ মিলিমিটার এবং ময়মনসিংহে ৩৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে একটি লঘুচাপ বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশ এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।