তবে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন গ্রামে সাংগ্রাই জল উৎসব উদযাপন হয়ে থাকে।
Published : 19 Apr 2025, 06:58 PM
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলায় বর্ষবিদায় ও বরণের বর্ণাঢ্য আয়োজন শেষ হয়েছে মারমা জাতিগোষ্ঠীর সাংগ্রাই জল উৎসবের মধ্য দিয়ে।
শনিবার রাঙামাটি জেলা শহরের চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে সাংগ্রাই উৎসব।
উৎসবে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পাড়া-মহল্লা থেকে মারমা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা অংশগ্রহণ করেন। হাজারো মানুষ একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি, দুঃখ ও অপশক্তিকে দূর করে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে এই উৎসবে মেতে ওঠেন।
মারমা সংস্কৃতি সংস্থা-মাসস আয়োজিত সাংগ্রাই জল উৎসবের প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আনন্দ উদযাপনের মাধ্যমে সব ভেদাভেদ ভুলে পার্বত্য এলাকার সব জাতি-গোষ্ঠী একসঙ্গে বসবাস করতে চাই। আমরা সবাই বাংলাদেশি হতে চাই। কেউ বৃহৎ, কেউ ক্ষুদ্র এটা আমরা চাই না এবং বৃহৎ, ক্ষুদ্র বলতে এখানে কিছু নাই।”
মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা-মাসস এর সভাপতি থোয়াই সুই খই মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদারসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা।
মাসস এর সভাপতি থোয়াই সুই খই মারমা বলেন, “প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান উদযাপনের মাধ্যমে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখার পাশাপাশি নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে চাই। আমাদের যেসব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে সেগুলো পুনরায় উজ্জীবিত করার চেষ্টা করি।”
এদিন সকালে মারমা নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়। অতিথিরা জল ছিটিয়ে সাংগ্রাই জল উৎসবের উদ্বোধন করেন। পরে মারমা যুবক-যুবতীরা একে-অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করেন।
মারমা ছাড়াও চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, বাঙালিসহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ মারী স্টেডিয়ামে গিয়ে উৎসব উদযাপন করেছেন। এ সময় নাচে গানে আনন্দে মেতে উঠেন তারা।
এ আয়োজনের মধ্য দিয়েই তিন পার্বত্য জেলায় বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, বিহু, বিষু, সাংক্রানসহ বর্ষবরণ উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটল। তবে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন গ্রামে সাংগ্রাই জল উৎসব উদযাপন হয়ে থাকে।