গত ২৩ অক্টোবর ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩’ সংসদে তুলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সংসদে উত্থাপিত ওই বিলের ৮ ধারায় আনসার ব্যাটালিয়নকে আটক ও তল্লাশীর ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।
Published : 26 Oct 2023, 09:43 PM
অপরাধী আটক, দেহ তল্লাশী ও মালামাল জব্দের ক্ষমতা পাচ্ছে না আনসার ব্যাটালিয়ন।
সংসদে উত্থাপিত বিলের এ সংক্রান্ত বিধান সংশোধনের সুপারিশ এসেছে সংসদীয় কমিটি থেকে।
বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সভাপতি বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংশোধনীর প্রস্তাব এসেছে। একটা আইন আছে, ওই আইনের ধারায় তারা পরিচালিত হবে। এখতিয়ার ও ক্ষমতার ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮ অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিতে পারবে। আটক ও তল্লাশির যে বিষয়টি বিলে রয়েছে, সংসদীয় কমিটির সুপারিশে তা থাকছে না।”
আনসার বাহিনীতে তল্লাশি ও আটকের বিধান যুক্ত করে সংসদে বিলটি ওঠার পরদিনই স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান চূড়ান্ত বিলে এ ধরনের বিধান থাকবে না।
গত ২৩ অক্টোবর ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩’ সংসদে তুলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সংসদে উত্থাপিত ওই বিলের ৮ ধারায় আনসার ব্যাটালিয়নকে আটক ও তল্লাশীর ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।
বিলে বলা হয়েছিল, “কোন ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্র মতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি; কোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।”
আনসার বাহিনীকে ‘গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়ার বিধান’ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ‘আপত্তি’ জানানো হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার বলেন, অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা আনসার বাহিনীকে দেওয়া হবে না।
এ নিয়ে ‘ভুল তথ্য’ ছড়ানো হচ্ছে মন্তব্য করে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, “এটা একটা মিস ইনফরমেশন, আপনাদের ভুল ধারণা। এই প্রশ্নটা ভুল ধারণার প্রেক্ষিতে করছেন।
“আনসার বাহিনীকে গ্রেপ্তার করার পারমিশন কখনও দেওয়া হয়নি, আজকেও দেওয়া হয়নি এবং কোনো আইন দ্বারা সেটা দেওয়ার কোনো ক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধির আওতার ভেতরে থেকে সমস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজ করতে হবে, এ হল মূল কথা।”
সংসদে উত্থাপিত বিলের ৭ ধারায় বলা হয়েছিল, আনসার ব্যাটালিয়ন নিরাপত্তামূলক কোনো কাজে সরকার বা সরকারের অনুমোদনক্রমে সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী দায়িত্ব সম্পাদন করবে। এখানে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে ‘দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে’।
সংসদে উত্থাপিত বিলে আনসার বাহিনীতে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড উল্লেখ করা হয়েছিল। সংসদীয় এক্ষেত্রে ‘মৃত্যুদণ্ড’ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
সংসদে তোলার পর বিলটি পরীক্ষা করে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।