কোটা অসম্পূর্ণ রেখেই শেষ হল হজ নিবন্ধন, ভিসা আবেদন শুরু রোববার

এ বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু নিবন্ধন হয়েছে তার চেয়ে ৭ হাজার ৫০৩ জন কম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2023, 06:07 AM
Updated : 12 April 2023, 06:07 AM

দুই মাসে আট দফা হজের নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েও পূরণ হল না বাংলাদেশিদের জন্য সৌদি আরবের নির্ধারিত কোটা; বুধবার এই নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সব মিলিয়ে এবার নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ৩৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ৯ হাজার ৬৬০ জন হজে যাবেন।

সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের হজ চুক্তি অনুযায়ী এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার সুযোগ ছিল। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সে হিসেবে কোটার চেয়ে ৭ হাজার ৫০৩ জন কম হজযাত্রী মিলল এবার।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিবন্ধন শুরু হয়েছিল। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার পরিস্থিতিতে এবার হজ প্যাকেজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বারবার সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ হচ্ছিল না।

গত ৭ এপ্রিল অষ্টম দফায় শেষবারের মত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হলেও সেই কোটা পূরণ হয়নি। ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে নিবন্ধনের সার্ভার।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল সেগুনবাগিচায় এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, শেষ মুহূর্তে বিভিন্ন সংস্থা থেকে হজে যাওয়ার জন্য অন্তর্ভুক্ত হবেন। ফলে কোটা পূরণে তেমন বাকি থাকবে না। তবে কতজন এভাবে গাইড ও মোনাজ্জেম হিসেবে হজে যাবেন, সে সংখ্যা তিনি তখন জানাননি।

বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যেসব এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ৯৭ এর নিচে, তারা বৃহস্পতিবারের মধ্যে অবশ্যই লিড এজেন্সি নির্ধারণ করে সমন্বয় করবে। এরপর হজ এজেন্সির বিপরীতে প্রযোজ্য গাইড ও মোনাজ্জেম সংখ্যা যোগ করে চুড়ান্ত কোটা সৌদি আরবে ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রির জন্য পাঠাতে হবে।

“এজেন্সির চূড়ান্ত কোটা সৌদি আরবে পাঠানোর পর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের পিলগ্রিম আইডি দেওয়ার জন্য সিস্টেম উন্মুক্ত করা হবে।”

ভিসা আবেদন শুরু রোববার

ধর্ম মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এ বছরের নিবন্ধিত হজযাত্রীদের বায়োমেট্রিক ভিসার আবেদন ১৬ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল ‍পর্যন্ত চলবে।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা হজে যাবেন, তারা সকল জেলার ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যালয়, ঢাকার আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বায়তুল মোকাররম মসজিদ কমপ্লেক্সে ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিস, ঢাকার ওয়াকফ প্রশাসকের কার্যালয় এবং আশকোনা হজ অফিসে বায়োমেট্রিক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেখানে তারা বায়োমেট্রিক ভিসার আবেদন করবেন সেখানে পাসপোর্ট জমা দিয়ে রশিদ গ্রহণ করতে হবে।

অন্যদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধনকারীরা নিজ নিজ এজেন্সির মাধ্যমে এবং হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ অফিসে বায়োমেট্রিক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রেও তাদের পাসপোর্ট জমা দিয়ে রশিদ নিতে হবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন হজ হতে পারে। অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের খরচ বেড়েছে লাখ টাকা, আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও বেশি, দেড় লাখ টাকা।

সৌদি আরব কিছু খাতে খরচ কমানোয় গত মার্চের শেষ দিকে হজ প্যাকেজের খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় সরকার। তাতে এবছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে লাগছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে প্যাকেজ মূল্য হবে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা।

অর্থনৈতিক সঙ্কটের এই সময়ে খরচ এতটা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়। হজের খরচ কমাতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হয়। পরবর্তীতে সরকার খরচ কমিয়ে বারবার নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ালেও তাতে সাড়া মেলেনি।