১৬ বছর আগে দায়ের করা এ মামলায় গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে জজ আদালত।
Published : 25 Jul 2023, 07:58 PM
নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদন শুনানির জন্য আগামী ৯ অগাস্ট দিন ঠিক করেছে হাই কোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন ঠিক করেন।
দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসামিপক্ষ মামলাটির বিচারে নানাভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। বিচারিক আদালতে তারা হাই কোর্টে মামলাটির শুনানির জন্য কার্যতালিকায় কজলিস্টে এনে কোনও প্রকার স্থগিতাদেশ ছাড়াই সময় নিচ্ছেন বার বার।
“আজ বিষয়টি শুনানির জন্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা প্রস্তুতি নেই অজুহাত দেখিয়ে সময় চান। আমরা তার বিরোধিতা করি। তখন আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৯ অগাস্ট তারিখ ঠিক করে দেন।”
খালেদার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে আলোচিত নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে গত ১৭ মে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে আবেদনটি করেন আইনজীবী কায়সার কামাল।
নাইকো মামলা: খালেদা জিয়ার বিচার শুরুর আদেশ বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন
কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল বিএনপি চেয়ারপারসনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। পরের বছর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সেখানে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।
ওইদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে হাজিরা দেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। এসময় বিচারক আসামিদের কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ? অন্য আসামিরা নিজে এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। এরপর আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ৩৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার ১০ বছরের এবং জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের সাজা হয়েছে।
ওই দুই মামলায় সাজা খাটার মধ্যেই পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালের মার্চে সাজা স্থগিত করে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। বাসায় থেকে চিকিৎসা করার এবং বিদেশে না যাওয়ার শর্তে তিনি গুলশানের বাসায় থাকছেন।