এই তদন্ত প্রতিবেদন মঙ্গলবার জমা হচ্ছে।
Published : 10 Apr 2023, 08:59 PM
বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর ব্যবসায়ীদের অনেকে নাশকতার সন্দেহ প্রকাশ করলেও তেমন কিছু তদন্তে পায়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদন্ত কমিটি।
গত ৪ এপ্রিলের ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড তদন্তে আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। কমিটি কাজ ইতোমধ্যে গুছিয়ে এনেছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যদের বরাত দিয়ে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই আগুনটা নাশকতা বা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হয়নি। অন্য কোনোভাবে আগুনটির সূত্রপাত হয়েছে বলে তদন্তে এসেছে।”
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “কয়েল বা সিগারেটের টুকরোর মতো কোনো উৎস থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে, যা মার্কেটের মাঝামাঝি জায়গায় লেগেছিল।”
এই তদন্ত কমিটির সোমবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা জমা পড়েনি।
জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা না পাওয়ায় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
“ক্ষতিগ্রস্ত সব মার্কেট ও ইউনিট থেকে ব্যবসায়ীদের তালিকা পাওয়া গেছে। একটি ইউনিটের তালিকা দাপ্তরিক সময়ের পরে জমা দেওয়ায় তদন্ত কমিটি আজ প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।”
তদন্ত কমিটির সদস্য ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের কাজ ‘শেষ পর্যায়ে’, মঙ্গলবার তারা প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন।
ডিএসসিসির মালিকানাধীন বঙ্গবাজারের মূল মার্কেটের চারটি ইউনিট- বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও আদর্শ ইউনিট ওই আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
পুড়ল বঙ্গবাজার: এক আগুনে ছাই হল হাজারো স্বপ্ন
আগুনে পুড়েছে পুঁজি, বঙ্গবাজারের মাঈনুদ্দিনরা ভারাক্রান্ত ঋণেও
বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করছে ডিএসসিসি
ঈদের আগেই বঙ্গবাজারে দোকান বসতে পারবে, আশ্বাস সালমান রহমানের
বঙ্গবাজারের উত্তর পশ্চিম কোণে সাততলা এনেক্সকো টাওয়ার, তার পূর্ব পাশে মহানগর কমপ্লেক্স মার্কেটও পোড়ে আগুনে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বঙ্গবাজারের পশ্চিম পাশের সড়কের অপর প্রান্তের দুটি মার্কেটও।
সব মিলিয়ে ৫ হাজারের মতো দোকান আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ডিএসসিসির হিসাব।
এই অগ্নিকাণ্ড তদন্তে ফায়ার সার্ভিসও একটি কমিটি গঠন করে। পাঁচ সদস্যের ওই কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সেই কমিটির তদন্ত শেষের খবর এখনও আসেনি।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার দায়িত্বটিও ছিল ডিএসসিসির তদন্ত কমিটির।
তারা যে তালিকা পেয়েছে, তা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৪ হাজার ২০০ জনের মতো। এই তালিকায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত এনেক্সকো মার্কেটের নাম নেই। ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বিমা করা থাকায় তারা তালিকায় নাম দিতে অনীহ ছিলেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে জানা গেছে।
এদিকে আগুনের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ঈদের আগে বুধবার থেকে ব্যবসায়ীদের চৌকি বসিয়ে কেনা-বেচার সুযোগ করে দিতে কাজ করছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।
সোমবার দিনভর সিটি কর্পোরেশনের এক্সক্যাভেটর দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলতে দেখা গেছে। ভাসমান লোকজনের জন্যও জায়গাটা খোলা ছিল, দিনভরই তারা ধ্বংসস্তূপ থেকে লোহা-টিন সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে।
একজন ব্যবসায়ী নেতা বলেন, তারা একজন ঠিকাদারের কাছে ধ্বংসস্তূপ বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তবে সেই ঠিকাদার আসেননি দেখে জায়গাটা জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে যে যা পারে নিয়ে যাচ্ছে।