ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনও অনুদান দেবে, জানিয়েছেন মেয়র।
Published : 05 Apr 2023, 07:04 PM
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা দিতে তাদের তালিকা তৈরি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
বুধবার বিকালে ঢাকা দক্ষিণের নগর ভবনে বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার ভয়াবহ এক আগুনে পুড়ে যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন বঙ্গবাজার।
সেখানে মূল মার্কেটে রয়েছে চারটি ইউনিট, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও আদর্শ ইউনিট। আগুনে বঙ্গবাজারের মূল মার্কেট সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশে এনেক্সকো টাওয়ার, মহানগর কমপ্লেক্স, বরিশাল প্লাজা ও বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট।
এসব মার্কেটের দোকানের অধিকাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, যেগুলো টিকে আছে, সেগুলোরও অধিকাংশ মালামাল পুড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৫ হাজারের মতো বলে একটি হিসাব দিয়েছে ডিএসসিসি।
ক্ষতিগ্রস্ত এই ব্যবসায়ীদের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল হতে অনুদান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র তাপস।
তিনি বলেন, “এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যাতে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যাপ্ত অনুদান দেবেন। পাশাপাশি, আমরাও আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অনুদান দেব।”
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে একটি কমিটি করেছে ডিএসসিসি। ওই কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা শনিবারের মধ্যে প্রস্তুত করার কথা বলেন মেয়র।
তিনি বলেন, “তালিকা প্রণয়নে যাতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর বাইরে অন্য কারও নাম না আসে, সেজন্য আপনারা সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করুন। আমাদের কমিটিকে সহায়তা করুন।
পুড়ল বঙ্গবাজার: এক আগুনে ছাই হল হাজারো স্বপ্ন
আগুনে পুড়েছে পুঁজি, বঙ্গবাজারের মাঈনুদ্দিনরা ভারাক্রান্ত ঋণেও
“তালিকায় দোকানের প্রকৃত মালিক, মালিকের মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংযুক্ত করবেন। আর দোকান যদি ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে মালিকের পাশাপাশি ভাড়াটিয়ার নাম, মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংযুক্ত করবেন।”
ওই তালিকা প্রস্তুত করে আগামী রোববার আবারও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানান মেয়র।
মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে আসা ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেট সমিতির নেতারা ধ্বংসস্তূপ থেকে দোকানের শাটার, পাইপসহ বিভিন্ন ধরনের দামি উপকরণ লুটপাট হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহবান জানান।
বঙ্গবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘আক্ষেপ’, ব্যবসায়ীদের সাধ্যমত সাহায্যের প্রতিশ্রুতি
জবাবে মেয়র করপোরেশনে দায়িত্বরত আনসার থেকে ১ প্লাটুন সদস্য বঙ্গবাজারে মোতায়েনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বৈঠক থেকেই এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন করে সেখানে নিরাপত্তা বিধানের নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক উপস্থিত ছিলেন।
মহানগর শপিং কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান, বঙ্গবাজারের মহানগরী ইউনিটের সভাপতি মো. লোকমান খান, আদর্শ ইউনিটের সভাপতি মো. শাহ আলম, বঙ্গবাজার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম, এনেক্সকো ভবনের চেয়ারম্যান শেখ মো. শাকিল, ঢাকা রেডিমেইড গার্মেন্টস ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক কাজী শরীফুল ইসলামও ছিলেন বৈঠকে।