রবিউল ওরফে আরাভের নামে ইন্টারপোলের রেড নোটিস

রেড নোটিসের তালিকায় যে ৬৩ বাংলাদেশির নাম রয়েছে, সেখানে সর্বশেষ সংযোজন রবিউল ইসলাম রবিউল, যিনি ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা খুনের আসামি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2023, 06:44 AM
Updated : 24 March 2023, 06:44 AM

ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের নামে রেড নোটিস জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন-ইন্টারপোল।

আন্তজার্তিক পুলিশ সংস্থাটির ওয়েবসাইটে শুক্রবার রেড নোটিসের তালিকায় থাকা অন্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে তার নামও দেখা যায়। খুনের অভিযোগে নোটিসে তার নাম লেখা হয়েছে- রবিউল ইসলাম রবিউল, বয়স ৩৫। জন্মস্থান বাগেরহাট।

রেড নোটিসের তালিকায় যে ৬৩ বাংলাদেশির নাম রয়েছে সেখানে সর্বশেষ সংযোজন রবিউল ওরফে আরাভ খান, যার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে ইন্টারপোলে চিঠি দেওয়া কথা জানিয়েছিলেন ঢাকার পুলিশ কর্মকর্তারা।

পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) মনজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, রেড নেটিস জারির পর প্রথম দুই-তিন দিন ‘পাবলিক’ হয় না। শুধু এনসিবি সদস্য দেশ সমূহের কর্মকর্তারা দেখতে পান। পরে সেটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলে সবাই দেখতে পান।

ইন্টারপোলের আট ধরনের নোটিসের মধ্যে রেড নোটিস জারির অর্থ হল- ওই ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ও বিচার বিভাগ বিচারের মুখোমুখি করতে অথবা দণ্ড কার্যকর করার জন্য খুঁজছে।

সদস্য দেশগুলো ইন্টারপোলের মাধ্যমে পলাতক আসামির সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে এবং সে দেশের সরকার তা খতিয়ে দেখে সন্তুষ্ট হলে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে।

অবশ্য সেক্ষেত্রে সে দেশের সরকারই তার বিচার শুরু করবে। আর তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হলে আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির প্রয়োজন হবে, আর বাংলাদেশ ও আরব আমিরাতের মধ্যে এই চুক্তি নেই। ফলে রেড নোটিস জারি হলেও রবিউল ওরফে আরাভকে ফেরানো কঠিন।

সম্প্রতি আরব আমিরাতের দুবাইয়ে একটি গয়নার দোকান উদ্বোধন হয়েছে ‘আরাভের’। সেটি উদ্বোধন করতে বাংলাদেশ থেকে উড়ে যান ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, অভিনেত্রী ফারদিন দীঘি, ইউটিউবার হিরো আলমসহ বিনোদন জগতের আরও কয়েকজন। আর সেই আয়োজন ঘিরে দেশে শুরু হয় তোলপাড়।

ওই অনুষ্ঠানের আগে আগে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, এই আরাভ আর কেউ নন, ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম, যিনি ভারতীয় পাসপোর্টে ‍দুবাই গেছেন।

আরও প্রকাশ পায়, এই আরাভ বা রবিউল একেক সময় একেক নামে পরিচিতি পেয়েছেন। তার বাবা ছিলেন নিম্ন আয়ের একজন মানুষ, যিনি ঢাকায় এসে হোটেলে শ্রমিকের কাজ করেছেন। সেই আরাভই এখন শত শত কোটি টাকার মালিক, যার অর্থের উৎস নিয়ে আছে ধোঁয়াশা।

এর আগে আরাভের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালী পাড়ার একজন জনপ্রতিনিধি জানিয়েছিলেন, রবিউলের জন্ম বাগেরহাটের চিতলমারিতে মামার বাড়িতে, সেখানেই তার অনেকটা বেড়ে ওঠা। এরপর তিনি ঢাকায় আসেন। ইন্টারপোলের রেড নোটিসেও তার জন্মস্থান বাগেরহাট লেখা হয়েছে।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানায় আরাভ বা রবিউলের বিরদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গেছে নয়টি। তবে মামলার সংখ্যা আরও বেশি।

মামুন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান ২০২১ সালের ২ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচার ফয়সল আতিক বিন কাদেরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। সেখানে রবিউল ইসলামসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন-

Also Read: মামুন হত্যা: রবিউলসহ আসামিদের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণেই ৮ মাস

Also Read: ‘আরাভের নামে’ ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করতে পুলিশের চিঠি

Also Read: আরাভ দুবাই পুলিশের নজরদারিতে, জানালেন রাষ্ট্রদূত

Also Read: মেডিকেলে পড়তে এসে আরাভকে বিয়ে করে ‘অপরাধ জগতে’

Also Read: আরাভ নামে কাউকে চিনি না: বেনজীর

Also Read: আরাভ ‘খুনের আসামি’ জেনেই দুবাই গেছেন সাকিব: ডিবি