জামিন: শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
Published : 21 Nov 2024, 04:24 PM
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র’ মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে জামিন দিয়েছে আদালত।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ ও শেখ শাকিল আহমেদ রিপন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর এই মামলায় আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, “আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ গত ২২ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক শফিক রেহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে। আদালতে আত্মসমর্পণ পূর্বক আপিল দায়েরের শর্তে এ সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।
“আজ আমরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করি এবং এ সাজার বিরুদ্ধে আপিল করে। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ৫ হাজার টাকা মুচলেখায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি আপিল গ্রহণ করেন।“
জামিন পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিক শফিক রেহমান বলেন, “এখানে একজন অনঅভিপ্রেত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যার নাম সজীব ওয়াজেদ জয়। আমি তার নাম উচ্চারণ করতে চাচ্ছিলাম না। তার অপহরণ মামলায় আজকে আমি এখানে।“
এটিকে ‘তথাকথিত মামলা’ আখ্যায়িত করে শফিক রেহমান বলেন, “যেটা নিউ ইয়র্কে ডিসমিস করা হয়েছে। নিউ ইয়র্কে বলে দেওয়া হয়েছে এই মামলায় শফিক রেহমানের নাম যেন কোথাও না থাকে। সে মামলার সারসংক্ষেপ ও কাগজপত্র দেখতে চাইলে আমার আইনজীবীরা আপনাদের দেখাতে পারবে। আমার নাম আমেরিকাতে নাই, যেখানে ১০ হাজার মাইল দূরে মামলা হয়েছিল।“
তিনি বলেন, “আপনাদের আমি চ্যালেঞ্জ দিতে চাই। আপনারা খুঁজে বের করুন সজীব ওয়াজেদ জয় কীভাবে এবং কেন আমেরিকা যেতে হয়েছিল তাকে? আপনারা খুঁজে বের করুন আব্দুল আওয়াল মিন্টুর বাসার সামনে মধ্যরাতে জনতা ব্যাংকের একজন স্টাফ কীভাবে পিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিল। কে গাড়ি চালাচ্ছিল এবং সে কোথায় এখন এইটা আপনারা খুঁজে বের করেন তাহলে সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।“
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের’ মামলায় ২০২৩ সালের অগাস্টে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় শফিক রেহমানকে।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০১৬ সালে পাঁচ মাস কারাগারেও থাকতে হয়েছিল শফিক রেহমানকে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি।
ছয় বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে গত ১৮ অগাস্ট দেশে ফেরেন শফিক রেহমান।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে শফিক রেহমান বলেন, “ধন্যবাদ, কারণ তিনি দেশে টাকা আনছেন। আর যারা নির্বাচন চাচ্ছেন তাদেরকে দুটি কথা বলতে হবে, সেটা হল টাকা আসবে কোত্থেকে? টাকা না আসলে বেতন পাবেন না, জিনিসপত্রের দাম কমবে না।
“ড. ইউনূস খ্যাতিমান লোক, তার আবেদনে সাড়া দিয়ে অনেকেই দিচ্ছেন। সুতরাং ড. ইউনূসকে আপনারা যেতে দিবেন না। তাকে কাজ করতে দিন। ১৭ বছরের জঞ্জাল ১৫ মাসেও পরিষ্কার করা সম্ভব হবে না।”
এই মামলায় যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান ছাড়াও আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ আরও চারজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
তারা হলেন-জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।
মাহমুদুর রহমান গত ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) আত্মসমর্পণ করেন জামিন চান। পরে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ৩ অক্টোবর জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা জয়ের গোপন তথ্যের জন্য এফবিআইএর এক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে আট বছর আগে সিজারকে সাজা দেয় নিউ ইয়র্কের একটি আদালত। এরপর ২০১৫ সালে ঢাকার পল্টন থানায় এ মামলা দায়ের করে পুলিশ।
২০১৮ সালে গোয়েন্দা পুলিশ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলে তাদের বিচার শুরু করে আদালত। সজীব ওয়াজেদ জয়কে ২০২২ সালের নভেম্বরে আদালতে গিয়ে এ মামলায় সাক্ষ্যও দেন।
পুরনো খবর
জয়কে 'হত্যার ষড়যন্ত্র': শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানের ৭ বছরের সাজা