১৫ এপ্রিল পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের কথা।
Published : 13 Apr 2024, 11:11 PM
বাংলা বর্ষবরণের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে যৌন নিপীড়নের ঘটনার ৯ বছর পেরোলেও এখনো সেই ঘটনার বিচার শেষ হয়নি।
এ মামলায় ৩৪ সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্যে গত ৩১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে ৯ জন যে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তাতে আসামির সাজা পাওয়া কঠিন মনে করে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
তাতে সায় দিয়ে আগামী সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন ঢাকার ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শওকত হোসেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, “মামলাটিতে বিচার শুরু হওয়ার পর তিন বছর কোনো সাক্ষীকে আদালতে আনা যায়নি। এরপর আমি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসাবে দায়িত্ব পেয়ে বেশ কয়েকজন সাক্ষীকে আদালতে আনতে সক্ষম হই।
“কিন্তু তাদের সাক্ষ্য মামলা প্রমাণে তেমন জোড়ালো হয়নি। যে কারণে মামলার রায়ের দিন গত ৩১ জানুয়ারি আমি আদালতকে বিষযটি জানাই। আর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় স্থগিত রেখে অবশিষ্ট সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য দরখাস্ত দিই। বিচারক তাতে সায় দেন।”
২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বর্ষবরণের উৎসবে ভিড়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে নারীরা যৌন নিপীড়নের শিকার হলে সমালোচনার ঝড় বয় দেশজুড়ে।
এরপর শাহবাগ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। নারীদের লাঞ্ছনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আটজনকে শনাক্তের পর গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।
আসামিদের পাওয়া যায়নি জানিয়ে ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবির এসআই দীপক কুমার দাস।
তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।
মো. কামাল নামে এক সবজি বিক্রেতাকে গ্রেপ্তারের পর ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর কেবল তাকে আসামি করে পিবিআইর পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অন্য সাত আসামিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি জানিয়ে অভিযোগপত্রে তাদের নাম ওঠেনি। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
২০১৭ সালের ১৯ জুন একমাত্র আসামি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আনিছুর রহমান বলেন, “আমার আসামি কামাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ, তাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
“এ পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তাসহ নয়জন সাক্ষী দিয়েছেন। তাদের জেরা করা হলে আমার আসামির বিষয় নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, “মামলাটিতে কিছু পুলিশ সদস্য সাক্ষ্য দিতে আসেননি। তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন জারি করা হবে। আশা করছি, তারা সাক্ষ্য দিলে দ্রুতসময়ের মধ্যে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে।”
সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের আদালত কমর্চারীরা অনেক সাক্ষীর সম্পূর্ণ ঠিকানা না লিখে সাক্ষীদের সমন পাঠিয়েছিলেন, যে কারণে সাক্ষী আনা যায়নি। এখন বিষয়টি তাদের বলায় তারা মনোযোগ দিয়ে তাদের নতুন ঠিকানা খুঁজে অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠাচ্ছেন।”
আরও পড়ুন: