প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সাভারের দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা রায়কে ছুরি মেরে হত্যার মামলায় বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান ও তার বন্ধু সাকিব ও সেলিম পালোয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইসমত জাহান।
এর আগে আসামি মিজানুর রহমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকা সাকিব এবং সেলিম পালোয়ানও এদিন আদালতে হাজির ছিলেন।
এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনানো হলে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার চান।
অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার এক বছর চার মাস পর এই মামলার বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়ে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য নেওয়ার তারিখও দিয়েছেন বিচারক।
ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফায়জুন্নেসার অনুপস্থিতিতে এ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইসমত জাহান।
তবে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে জানতেন না বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে দাবি করেন নীলার বাবা নারায়ণ চন্দ্র রায়। সে কারণে তিনি এদিন আদালতেও আসেননি।
তিনি অভিযোগ করেন, তার পক্ষে আইন ও শালিস কেন্দ্রের আইনজীবীসহ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কিংবা নিজের নিয়োজিত অপর আইনজীবীও এ বিষয়ে তাকে জানাননি।
এমনকি তাকে অভিযোগ গঠনের ভুল তারিখ জানানো হয়েছে বলেও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে অভিযোগ করেন মামলার বাদী নারায়ণ চন্দ্র রায়।
২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির অ্যাসেড স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা রায়কে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।
সেখানে কাজিমুকমাপাড়ায় এক বাড়িতে তার পরিবার ভাড়া থাকত। তাদের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার বালিরটেক এলাকায়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, নীলাকে প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন ব্যাংক কলোনি এলাকার মিজানুর। তাতে রাজি না হওয়ায় নীলাকে সে ছুরি মেরে হত্যা করে।
নীলার বাবা নারায়ণ চন্দ্র রায় ঘটনার পরদিন মিজানুর রহমান, তার বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকাকে আসামি করে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নির্মল কুমার দাস আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর মামলাটি বদলি হয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসে।
মামলায় এই তিন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মিজানুরের বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমুন্নাহার সিদ্দিকার নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়। সাক্ষী করা হয় ১৮ জনকে।
মামলার প্রধান অসামি মিজানুর হাকিমের কাছে ঘটনার কারণ ও ঘটনার পূর্বাপর বর্ণনা করে গত বছর ১ অক্টোবর ঢাকার বিচার বিভাগীয় হাকিমের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
আরও খবর: