৫ মাসেও বিচারে যায়নি নীলা রায় হত্যা মামলা

প্রেমের প্রস্তাবে ‘রাজি না হওয়ায়’ সাভারে স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যার ঘটনায় বখাটে মিজানুর রহমান এবং তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা পড়ার পর ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও বিচার শুরু হয়নি।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2021, 10:02 AM
Updated : 23 Sept 2021, 10:02 AM

ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তার কার্যালয় বলছে, মামলার সব নথি হাতে না থাকায় তা বিচারে পাঠানো যায়নি। জামিন শুনানির জন্য এতদিন মামলার মূল নথি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ছিল।

মামলার তদন্ত কমকর্তা সাভার থানার পুলিশ পরিদশর্ক নির্মল কুমার দাস গত ২৮ এপ্রিল এ আাদালতে মিজানুরসহ তিনজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।

গতবছর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির অ্যাসেড স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা রায়কে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।

পরদিন তার বাবা নারায়ণ রায় মিজানুর রহমান চৌধুরী (২১) এবং তার বাবা আব্দুর রহমান (৬০) ও মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকাকে (৫০) আসামি করে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে তদন্ত করে বখাটে মিজানুর এবং তার দুই সহযোগী সাকিব হোসেন (২০) ও সেলিম পালোয়ানকে (৪২) আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ইতোমধ্যে সাকিব ও সেলিম হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন, মিজানুর কারাগারে আছেন।

সাভারের স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে

অভিযোগপত্রে জমা দেওয়ার সময় আদালত পুলিশের পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, মহামারীর মধ্যে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলে যাচাই-বাছাই করে মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ১২ অগাস্ট আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলেও নীলা রায় হত্যা মামলা আর এগোয়নি।

পুলিশ কর্মকর্তা মেজবাহ মহামারীর কারণ দেখিয়ে বলেন, “মামলার নথি বিচারে পাঠানো হবে তাড়াতাড়ি, আর যদি কোনো পলাতক আসামি থাকে তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সময় দিতে হবে।”

তবে মামলার অভিযোগপত্রে পলাতক হিসেবে কারো নাম আসেনি। সে কারণে পলাতক আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের আর দরকার পড়ছে না।

নীলার বাবা নারায়ণ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে টেলিফোনে বলেন, “এতদিন লাগে অভিযোগপত্র আদালতে জমা হওয়ার পর বিচারে যেতে? আমাকে তো অভিযোগপত্র জমার পর আদালত থেকে কোনো নোটিসও দেওয়া হয়নি।”

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাভার পৌর এলাকার কাজিমুকমাপাড়ার বাসিন্দা নীলাকে প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন ব্যাংক কলোনি এলাকার মিজানুর। তাতে রাজি না হওয়ায় নীলাকে সে ছুরি মেরে হত্যা করে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়ার পর মিজানুর গত বছর ১ অক্টোবর ঢাকার একজন বিচারিক হাকিমের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন।

এ মামলার আসামি মিজানুরেরর বাবা আব্দুর রহমান এবং মা নাজমুন্নাহারকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তারা এখন জামিনে রয়েছেন। অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে ১৮ জন সাক্ষী ও আটটি আলামতের বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন