এবার ঈদে একদিন বেশি ছুটি দেওয়ার সুপারিশ করেছে যাত্রী অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠনটি।
Published : 02 Apr 2023, 05:24 PM
বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটির কাজ শেষ না হওয়ায় গত ঈদের মত এবারও উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যানজটের আশঙ্কা করছে যাত্রী অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
এ সড়ক ছাড়াও ঢাকা থেকে বের হওয়ার প্রধান সড়ক এবং বিভিন্ন মহাসড়কের কিছু স্থান নিয়েও দুশ্চিন্তায় তারা।
ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলামুখি সড়কে বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, বাবু বাজার ব্রিজ, গাবতলী মাজার রোড, টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় বিশেষ নজরদারির তাগিদ দিয়েছে সংগঠনটি।
টঙ্গীতে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের মীরের বাজার, গাজীপুরের কালীগঞ্জের উলুখোলা, কাঞ্চন ব্রিজ, মীরের ধৌর এলাকাতেও যানজট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে তারা।
আশুলিয়া, বাইপাইলে ঢাকা ইপিজেড, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু, জিঞ্জিরা, কেরানীগঞ্জ নিয়েও দুর্ভাবনা আছে যাত্রীকল্যাণের।
রাজধানীর ভেতরে হাতিরঝিল, মহাখালী বাস টার্মিনাল, রামপুরা, রামপুরা-ডেমরা সড়কের আমুলিয়া, ডেমরা-স্টাফ কোয়ার্টারেও বিশেষ নজর দেওয়ার তাগিদও দিয়েছে তারা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সুলতানা কামাল ব্রিজ, বরপা ও ভুলতা; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চিটাগাং রোড, মদনপুর, মেঘনা টোল প্লাজা এবং কুমিল্লার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেও যানজট হতে পারে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসগকে চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল, নাটোরের বনপাড়ার মোড় এবং মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাটেও নজরদারির তাগাদা উঠে এসেছে।
রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় এসব এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং ইজিবাইক বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন।
তিনি বলেন, “এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সকল ফুটপাত ও রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করতে হবে।”
দুর্ভোগ নিয়ে ঈদযাত্রায় বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে পরিবারের সদস্যদের ১৫ রমজানের পর থেকে বাড়ি পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন মোজাম্মেল।
ছুটি একদিন বাড়ানোর তাগিদ
২৭ রোজায় শবে কদরের বন্ধের পর ঈদের ছুটির আগে একদিন যে কর্মদিবস আছে, সেদিনও ছুটি ঘোষণার সুপারিশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মোজাম্মেল বলেন, ১৯ এপ্রিলের বন্ধের পর ২০ এপ্রিল অফিস খোলা থাকায় যাত্রীদের একটি বড় অংশ আটকে যাবেন। সেদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলে যাত্রীরা ১৮ এপ্রিল থেকেই বাড়ি ফিরতে পারেন। নইলে ২১ এপ্রিল সড়ক, রেল ও নৌ পথের পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রার সুযোগ দিলে রাজধানীর ৫ থেকে ৬ লাখ বাইকার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে পারেন বলেও মনে করেন তিনি। এতে ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ‘বহুলাংশে বেড়ে যাবে’ বলে মত দেন যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব।
‘অতিরিক্ত যাত্রী ও বেশি ভাড়া আদায়ের লোভে’ ফিটনেসহীন যানবাহনে যাত্রীবহন, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রীবহন হয় জানিয়ে কার্যকর পদক্ষেপের তাগিদ দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।
নৌপথে পর্যাপ্ত বয়া-বাতি ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম না থাকা, চালককে বিশ্রামহীনভাবে ১০ থেকে ১২, এমনকি ১৫ ঘণ্টা যানবাহন চালাতে বাধ্য করা এবং অদক্ষ চালক দিয়ে যানবাহন চালানোর কারণে প্রতি বছর দুর্ঘটনা হয় জানিয়ে এ ক্ষেত্রেও কার্যকর পদক্ষেপ চেয়েছেন মোজাম্মেল।
রেলের টিকেট শতভাগ অনলাইনে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হতে বলেও মত প্রকাশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। নিরক্ষর, স্বল্প শিক্ষিত এবং অনলাইন ব্যবহারে অনভ্যস্ত প্রান্তিক জনগণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়।
প্রতিটি বাস, লঞ্চ ও রেল স্টেশনে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। মহাসড়কে ডাকাতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দাবি জানান মোজাম্মেল।