২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন স্কুলে স্কুলে উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হচ্ছিল; এবার সেই বই উৎসব হবে?
Published : 25 Sep 2024, 12:39 AM
আসছে নতুন বছরে প্রথম দিন বই উৎসব হবে কি না, সে প্রশ্নের স্পষ্ট কোনো উত্তর না দিলেও অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নতুন বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে কাজ করছে সরকার।
সেই লক্ষ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য ২০টি প্যাকেজে ৯৮টি লটের মধ্যে ৭০টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৭ কোটি ৯৭ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩৭ টাকা।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে বই নিয়ে ওই প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, "প্রাথমিকের বই ছাপানোর ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছি। যথা সময় যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা বই পায় সেটা আমরা এনশিওর করব। সর্বোচ্চ মানের বিষয়ে বলা হয়েছে। আমরা বলেছি আমাদের কর্ণফুলী পেপার মিলের মানটা ভালো। অন্যরাও আছে। তবে এর নিচে যেন না যায়, সেটা মনিটর করা হবে।"
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন স্কুলে স্কুলে উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছিল। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ২ কোটি ১২ লাখ ৫২ হাজার ৬ জন শিক্ষার্থীর হাতে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৬০৬টি বই তুলে দিয়েছিল সরকার।
২০২৫ সালের প্রথম দিন বই উৎসব হবে কি না জানতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, "বই উৎসবের বিষয়টি আমি বলতে পারি না। তবে ছাত্র-ছাত্রীরা বই পাবে।"
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রণীর ২০টি প্যাকেজে ৯৮টি লটের মধ্যে ৭০টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার। প্রতিটি বই মুদ্রণ, কাগজসহ বাঁধাই ও সরবরাহ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৩৬ টাকা ৭৬ পয়সা। বাকি ১৮টি লটের প্রস্তাব পুনঃদরপত্রের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল পাল্টে দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিকে ফিরছে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ। মূল্যায়ন পদ্ধতি অনেকটাই জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর মত হবে।
গত ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব রহিমা আক্তার স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে বলা হয়, নানা সমস্যার কারণে জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ ‘বাস্তবায়নযোগ্য নয়’।
এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বাঁধা হিসেবে শিক্ষকদের প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবের কথা বলা হয় সেখানে।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার পাঠ্যক্রম সংশোধন ও পরিমার্জন করে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে এবং আগামী বছর থেকে পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন আসবে।