“যত দ্রুত সংস্কার প্রস্তাব কমিশনের কাছে আসবে ততই প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে।“
Published : 16 Jan 2025, 04:49 PM
নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে সংস্কার কমিশন যেসব প্রস্তাব রেখেছে, সেগুলোর চূড়ান্ত রূপ পাওয়া গেলে নির্বাচন কমিশনও তাদের ‘করণীয় ঠিক করতে পারবে’ বলে কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন নির্বাচনি আইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে এখনই কমিশনার ‘আগাম’ কিছু বলতে পারছে না; তবে যত দ্রুত সংস্কার প্রস্তাব কমিশনের কাছে আসবে ততই প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন এই নির্বাচন কমিশনার।
কমিশনার মাছউদ বলেন, “সব কিছু যখন একটা শেপ বা আকারে আসবে তখন আমরা চিন্তা করবো কিভাবে ইসিকে ইন্ভল্ভ করা যায়। যত দ্রুত আসবে ততই প্রস্তুতি নিতে আমাদের জন্য সহায়ক হবে।”
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এই ইসি কমিশনার।
আগের দিন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, দুদক ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে জাতীয় নির্বাচনে কোনো আসনে ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে সেখানে পুনর্নির্বাচন আয়োজন করার সুপারিশ রাখা হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন বাতিল, জাতীয় নির্বাচনে 'না-ভোট’ ফেরানোর সুপারিশ করা হয়েছে।‘না-ভোট’ বেশি পড়লে নির্বাচন বাতিল করা এবং পুনর্নির্বাচনে বাতিল হওয়া নির্বাচনের কোনো প্রার্থী যেন অংশ নিতে পারেন, সে বিধান রাখতে বলা হয়েছে।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমার পরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এক ব্রিফিংয়ে জানান, রাষ্ট্র সংস্কারে আসা সুপারিশগুলো নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে কমিশনগুলোকে আরও এক মাস সময় দেওয়া হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতৈক্যের ভিত্তিতে সরকার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে হাত দেবে।
তিনি বলেছেন, একদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু দাবি আছে, অন্যদিকে জনগণের কিছু দাবি আছে, আবার দুই পক্ষের কিছু যৌথ দাবিও আছে। একমাসের মধ্যে আমরা একটা রোডম্যাপ তৈরি করতে সক্ষম হবো বলে মনে করি।
ইসির অপেক্ষা
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেছেন, সংবিধান, নির্বাচনি আইনসহ নানা বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে ‘আগাম কিছু’ বলা যাচ্ছে না। তবে বিধিবিধান, আইনকানুন বিভিন্ন জায়গায় কমিশনের উদ্যোগ থাকবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ মুহুর্তে কোনোটাই অগ্রিম কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। কি আসছে, সেটা যখন আসবে তদন্ত চিন্তা করা যাবে। সংসদের উচ্চ কক্ষ, নিম্ন কক্ষ করার প্রস্তাব আছে, সংবিধান সংশোধনের বিষয় আছে। সব কিছু যখন একটা শ্যাপে আসবে তখন আমরা চিন্তা করবো কিভাবে ইসিকে ইন্ভল্ভ করা যায়।”
তিনি জানান, সংস্কার প্রতিবেদন পাওয়ার পর করণীয় নির্ধারণ করবে কমিশন।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “যত দ্রুত আসবে ততই প্রস্তুতি নিতে আমাদের জন্য সহায়ক হবে। যত দ্রুত আসবে।”
জাতীয় নির্বাচনের জন্য কমিশন সব সময় ‘প্রস্তুত’ জানিয়ে কমশিনার বলেন, “আমরা সব সময় প্রস্তুত। নির্বাচন কমিশন মানে নির্বাচন করা। কাজেই আমরা প্রস্তুত।”
সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে ‘ইসি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছেন কমিশনার মাছউদ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া আমাদের দায়িত্ব, এটা আমানত। রাতের ভোটের আমরা কল্পনা করতে পারি না। আমরা আত্মবিশ্বাসী সকলের সহযোগিতা পেলে নিরপেক্ষ, সুন্দর নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারবো।”
৪০ শতাংশ ভোট না হলে সংশ্লিষ্ট আসনে পুনর্বিাচনের সুপারিশের বিষয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “এক্ষেত্রে আইনের পরিবর্তনগত বিষয় আসবে। সংবিধানের পরিবর্তনের বিষয় থাকবে, আইনের পরিবর্তনের বিষয় থাকতে পারে। যখন একটা (সংস্কার প্রস্তাব) শেইপে (আকার) আসবে তখন আমাদের বক্তব্য, আমাদের করণীয় জানাবো।”
আরও পড়ুন:
আগে জাতীয় নির্বাচন করার পক্ষে ইসি
প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময় ধরে ভোটের প্রস্তুতি চলছে: ইসি সচিব
৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনর্নির্বাচনে কমিশনের সুপারিশ
সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের রোডম্যাপ এক মাসের মধ্যেই: রিজওয়ানা