“মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে যাব,” ট্রাইবুনালকে বলেছেন প্রধান কৌঁসুলি।
Published : 20 Apr 2025, 04:29 PM
জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের সময় ‘গণহত্যার’ অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২৪ জুন দিন ধার্য করেছে।
‘উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়’ (সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি) এর অভিযোগ আনা এ মামলায় রোববার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার দিন ছিল।
তদন্ত শেষ পর্যায়ে জানিয়ে প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালের কাছে দুই মাস সময় চেয়েছেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, এই মামলার শুরুতে একমাত্র আসামি ছিলেন শেখ হাসিনা। যার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। পরে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকেও আসামি করা হয়েছে।
“মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পেয়ে যাব। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় চাই।”
শুনানির বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৪ জুন প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করে দেন।
এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় চৌধুরী মামুনকে।
সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
এরপর ১৬ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারা দেশে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অর্ধ শতাধিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে।
গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের চেষ্টায় ‘গণহত্যার’ দুই অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গত ১৭ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এর মধ্যে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ মামুনকে যুক্ত করে একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তারি জারি করা হয়। সাবেক আইজিপি মামুন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়’ (সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটির) এর অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তার ‘নির্দেশে ও পরিকল্পনায়’ জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে।
বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বাকি ৪৫ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শহাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলাম।
আরো আছেন সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক যারা তাদের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিস’ জারির জন্য ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করতে গত নভেম্বরে পুলিশ সদরদপ্তরকে অনুরোধ করেছিল ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন।
শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিস’ জারির জন্য পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ইন্টারপোলের কাছে তিন ধাপে আবেদন করেছে বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর এসেছে।
এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে।
পুরনো খবর:
গুম: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মাইকেল চাকমার অভিযোগ
গুমের মামলায় ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও ৩ অভিযোগ