তাদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩৮ কোটি টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
Published : 20 Mar 2025, 05:06 PM
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তার মেয়ে ও কথিত এক শ্যালিকার বিরুদ্ধে ‘অবৈধভাবে’ সম্পদ অর্জনের আলাদা মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
তাদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩৮ কোটি টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এসব মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার মামলা অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরে দুদক মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আক্তার হোসেন বলেন, মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান আছে।
দুদক কর্মকর্তা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে ২৬ কোটি, তার মেয়ে সুমাইয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ৪ কোটি ও কথিত শ্যালিকা সৈয়দা হক মেরির বিরুদ্ধে প্রায় ৮ কোটি টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
সুমাইয়া ও মেরির বিরুদ্ধে যে দুটি মামলা হচ্ছে সেগুলোতে আমুকেও আসামি করা হয়েছে।
গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ৬ নভেম্বর ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তার আগে ১৪ আগস্ট আমুর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। এরপর ২ মার্চ আমু, তার স্ত্রী ও মেয়ের ব্যাংক হিসাবসহ তাদের ৪৪টি হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত।
এসব ব্যাংক হিসাবে ১৮ কোটি ৩৯ লাখ ৯২ হাজার ৫৭৪ টাকা থাকার তথ্য দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঝালকাঠিতে আমুর বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে তার ওই বাসভবন থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধারের তথ্য দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দুদক কর্মকর্তার তথ্যমতে, আমুর বিরুদ্ধে ২৬ কোটি ২৭ লাখ ৮১ হাজার ৪৬১ টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন ও ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩১ কোটি ৪৭ লাখ ৯২ হাজার ৭০৮ টাকা ‘সন্দেহজনক লেনদেনের’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
আমু ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে ‘অবৈধভাবে’ এই সম্পদ অর্জন করেছেন তুলে ধরা হয়েছে এজাহারে।
সুমাইয়া হোসেনের বিরুদ্ধে অনুমোদন করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি তার বাবা আমির হোসেন আমুর ‘সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির’ মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮১ টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন করেছেন।
এছাড়া সুমাইয়া হোসেন ১৮টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৪৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ টাকা ‘সন্দেহজনক লেনদেন করে ওই টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন’।
সৈয়দা হক মেরীর বিরুদ্ধে অনুমোদন করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তার কোনো বৈধ আয়ের উৎস না থাকা সত্ত্বেও আমির হোসেন আমুর সহায়তায় তিনি সম্পদশালী হয়েছেন।
মেরীর বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭০ টাকা মূল্যের ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জন ও ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ ৪১৭ টাকা ‘সন্দেহজনক লেনদেন’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।