পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও নিরাপত্তা চেয়ে বাবুল আক্তারের দুটি আবেদন খারিজ করেছিল চট্টগ্রামের একটি আদালত।
Published : 21 Nov 2023, 08:11 PM
হেফাজতে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ আদেশ বহাল রেখেছে হাই কোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের রিভিশন খারিজ করে মঙ্গলবার বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চ এ রায় দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
সাবেক এসপি বাবুল আক্তার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছা আদালতে মামলার যে আবেদন করেন তা ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর খারিজ হয়ে যায়।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তার হাই কোর্টে রিভিশন আবেদন করেন।
বাবুল আক্তারের ওই মামলার বিবাদীরা ছিলেন পিবিআইয়ের বর্তমান প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, পিবিআইর চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম মহানগরের এসপি নাঈমা সুলতানা, পিবিআইর তৎকালীন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা, পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ও পিবিআই পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবির।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় ২০২২ সালের ১২ মে তার স্বামী বাবুল আক্তারের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। একই দিনে আরেকটি হত্যা মামলা করেন তার শ্বশুর। সে মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
২০২১ সালের ১০ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ওই মামলায় তাকে ‘আটকে রেখে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য হ্যান্ডকাফ পরিয়ে, ঘুমাতে না দিয়ে, গোসল করতে না দিয়ে, অজু করার পানি না দিয়ে নির্যাতন করার’ অভিযোগ আনা হয় আর্জিতে।
সেখানে বলা হয়, এক নম্বর আসামির (বনজ কুমার) ‘নির্দেশে’ বাবুলকে ‘অন্যায়ভাবে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাঞ্ছনাকর আচরণ ও নির্যাতন’ করা হয়েছে। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫(১) ও ৫ (২) ধারায় এ অভিযোগ করা হয় আর্জিতে।
বাবুলের মামলার আবেদনের পর ‘মামলার আসামিদের নির্দেশে ও প্ররোচনায়’ গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফেনী মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ফেনী কারাগারে প্রবেশ করে বাবুল আক্তারের কক্ষে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালান বলে অভিযোগ আনেন বাবুল। কারাগারে ‘জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে’ ১২ সেপ্টেম্বর আদালতের কাছে আরেকটি আবেদন করেন তিনি। তার এই দুই আবেদন একসঙ্গে শুনে দুটিই খারিজ করে চট্টগ্রামের ওই আদালত।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন সে সময় পুলিশ সুপার পদে থাকা বাবুল আক্তার।
সেই মামলায় তাকেই প্রধান আসামি করে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আাদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পিবিআই।
অভিযোগপত্রে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই বলেছে, ‘পরকীয়ার ঘটনা জেনে যাওয়ায়’ সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার ‘সোর্সদের দিয়ে’ স্ত্রী মিতুকে ‘খুন করান’ বলে উঠে এসেছে তাদের অনুসন্ধানে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা ও খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু। এদের মধ্যে মুছা ও কালু পলাতক।
আরও পড়ুন
মামলা আর নিরাপত্তা: বাবুল আক্তারের দুই আবেদনই খারিজ
এবার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পিবিআই’র আরেক কর্মকর্তার মামলা
এবার বাবুলের বিরুদ্ধে পিবিআই প্রধানের মামলা
পিবিআই প্রধানের মামলায় বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ফের পেছালো বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পিবিআই প্রধানের মামলার প্রতিবেদন