“সেজন্য প্রথমেই দরকার মানসিকতার পরিবর্তন,“ বলেন তিনি।
Published : 30 Jan 2024, 08:44 PM
চলতি পথে যানবাহনে নারীকে যে নানাভাবে হররানির শিকার হতে হয়, সেই বাস্তবতা তুলে ধরে গণপরিবহনকে ‘নারীবান্ধব ও হররানিমুক্ত’ করার ওপর জোর দিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি।
তিনি বলেছেন, “গণপরিবহনে নারীদের হররানি কমাতে বিআরটিএ এবং সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাহায্যে বাসের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু অন্য গণপরিবহনে যে নারীরা যাতায়াত করেন, তাদের হয়রানি কীভাবে বন্ধ হবে? সেজন্য প্রথমেই দরকার মানসিকতার পরিবর্তন।“
মঙ্গলবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাকক্ষে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ এর অংশ হিসেবে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
নারী উন্নয়নে এখনো ‘অনেক কাজ বাকি’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখনও গ্রামে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। শারীরিক, মানসিক ও শিক্ষা সব দিক দিয়েই তারা পিছিয়ে পড়ছে। বিয়ের পর তারা ভুগছে তীব্র হতাশায়।
“তাদের একটি বড় অংশ হতাশা কমাতে নিয়মিত পান খান। পানপাতার সঙ্গে সুপারি, জর্দা, সাদা পাতা মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে নারীরা জরায়ুমুখের ক্যানসারের পর সব থেকে বেশি আক্রান্ত হন মুখের ক্যানসারে, যা পান খাওয়া ও মুখ পরিষ্কার না করার কারণেই হয়ে থাকে।“
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী যেহেতু নারী, তাদের পিছিয়ে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি জানান, ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম প্রতিবছর যে জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স প্রকাশ করে, সেখানে টানা নবম বারের মত দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
“২০০৬ সালেও বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯১তম। আর ২০২৩ সালে এসে ৫৯তম অবস্থানে রয়েছে। অনেক সমস্যা থাকলেও দেশ জেন্ডার সমতা অর্জনে এগিয়েছে।”
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান নারীর উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, অধিদপ্তরের নিবন্ধিত সমিতি রয়েছে ২০ হাজার ৫৭১টি। ২০০৯ থেকে ২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত এই সমিতিগুলোকে ১২০ কোটি ২১ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
দুস্থ নারীদের আয় বাড়াতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ১২৫টি সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে। নারীদের আত্মকর্মস্থান বাড়াতে সাতটি আবাসিক ও একটি অনাবাসিক মহিলা প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বাড়াতে ৪৩টি ডে কেয়ার পরিচালিত হচ্ছে বলেও তিনি তথ্য দেন।
এ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা দেয় সরকারের মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর।
এবার অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ক্যাটাগরিতে নাজমা মাসুদ, শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনকারী ক্যাটাগরিতে বিপাশা হোসাইন, সফল জননী ক্যাটাগরিতে জোহরা আক্তার, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন করে জীবন শুরুর ক্যাটাগরিতে গীতা রাণী, সমাজ উন্নয়নে অবদান ক্যাটাগরিতে অ্যাডভোকেট মায়ারাণী দেব ভৌমিক সম্মাননা পেয়েছেন।