দগ্ধ ছয়জনের সবারই শ্বাসনালী পুড়েছে। আহত দুজনের অবস্থাও ভালো নয় বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন।
Published : 06 Mar 2023, 04:28 PM
ঢাকার মিরপুর রোডে সুকন্যা টাওয়ারের কাছে তিনতলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ঘটনায় আহতদের মধ্যে দগ্ধ ছয়জনের অবস্থা ‘শঙ্কামুক্ত নয়’ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ওই ছয়জন ভর্তি আছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। এছাড়া আহত আরও চারজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং দুজন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থাও ‘ভালো নয়’।
রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে তিন তলা শিরিন ভবনের তৃতীয় তলায় ওই বিস্ফোরণে ভবনের দেয়ালের আংশিক ধসে পরে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের আরেকটি ভবন।
ওই র্ঘটনায় মৃত্যু হয় তিনজনের। আহত ৩০ থেকে ৪০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনার পরপরই। তাদের মধ্যে বেশিরভাগকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আর দগ্ধ এবং গুরুতর আহত ১২ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও বেসরকারি হাসপাতাল পপুলারে ভর্তি করা হয়।
বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ নূর নবী, আকবর আলী, আশরাফুজামান, আশা, হাবিবুর রহমান এবং জহুর আলী নামে ছয়জন এখন ভর্তি আছেন বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
তাদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় কেউ ‘শঙ্কামুক্ত নন’ বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
সোমবার এই চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের মেজর বার্ন, ইনহেশন বার্ন রয়েছে। সবাই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তাদের শরীরের ৩৮ থেকে ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। যেখানে ১৫ শতাংশের বেশি পুড়লেই ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়…। প্রয়োজনে তাদের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হবে।”
শিরিন ভবনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ সাইনবোর্ড, সামনে রক্তের ছোপ
আহতদের মধ্যে আটজনকে রোববার নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাদের মধ্যে চারজনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এখন যে চারজন সেখানে ভর্তি আছেন, তাদের সবারই মাথাসহ শরীরের নানা জায়গায় আঘাত বা ক্ষত রয়েছে বলে জানান জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আলাউদ্দিন।
তিনি বলেন, “যে চারজন ভর্তি আছেন তাদের দুজনের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। একজন আইসিইউতে আছেন। একজনকে রাখা হয়েছে এইচডিইউতে।”
এছাড়া ধাণমণ্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি থাকা দুজনের অবস্থা তেমন গুরুতর নয় বলে জানান ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপক (কাস্টমার সার্ভিস) মো. আবুল খায়ের।
তিনি বলেন, “আমাদের এখানে ভর্তি দুজনের একজনের হাত কেটে গেছে। আরেকজনের কোমরের হাড়ে চিড় ধরেছে, মাথা ফেটে গেছে। তবে তাদের অবস্থা তেমন গুরুতর নয়।”
তিন তলা শিরিন ভবনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ২৪ ঘণ্টা পরও ভবনটির সামনের রাস্তায় রয়ে গেছে রক্তের ছাপ।
কীভাবে সেখানে ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটল, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সেখানে বিস্ফোরক সামগ্রীর কোনো আলামত না মেলায় বিষয়টি দুর্ঘটনা বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ।