অবৈধ সম্পদের মামলায় নির্দোষ দাবি ডিআইজি মিজানের

যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৪ মে দিন ঠিক করেছেন বিচারক। তারপর মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসবে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2023, 02:09 PM
Updated : 14 May 2023, 02:09 PM

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলার আত্মপক্ষ শুনানিতে পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও তার দুই স্বজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।

রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ তারা নিজেদের বক্তব্য্য উপস্থাপন করেন। অপর দুই আসামি হলেন–ডিআইজি মিজানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসান।

রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো কাগজপত্রই মিজানের পক্ষে যাবে না। তার সাজা হবে। আর খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় দেয়া হবে।”

মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৪ মে দিন ঠিক করে দিয়েছেন বিচারক বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম। যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলেই মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসবে।

এ দিন আসামি ডিআইজি মিজানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা ডিআইজি মিজানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও তার ভাগনে মাহমুদুল হাসানকে আদালতে হাজির হন। তবে ডিআইজি মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না শুরু থেকে পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৪ জুন মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক।

২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আসিফুজ্জামান এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি মিজানুর রহমান তার ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে ২৪ লাখ ২১ হাজার ২২৫ টাকায় শুলশান-১ এর পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে ২১১ বর্গফুট আয়তনের একটি দোকান বরাদ্দ নেয়।

মিজানুর রহমান নিজে নমিনি হয়ে তার ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর একটি ব্যাংকে এফডিআর অ্যাকাউন্ট করে ৩০ লাখ টাকা জমা করেন।

তবে দুদক অনুসন্ধান শুরু করলে সে টাকা ভাঙ্গিয়ে সুদে আসলে ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫৭ টাকা তুলে ফেলেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, মিজানুর রহমান তার স্ত্রী রত্না কাকরাইলে ১৭৭৬ বর্গফুটের একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট ক্রয়ে ২০১১ সালে চুক্তিনামা করে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ টাকা নির্মাণ কোম্পানিকে পরিশোধ করেন। পরে ২০১৬ সালে ফ্ল্যাটটি ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে দলিল রেজিস্ট্রি করেন।

এ মামলায় মিজান ২০১৯ সালের ১ জুলাই হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করলে তা নাকচ হয় এবং হাই কোর্ট বেঞ্চ তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।

তার ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান ৪ জুলাই একই আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানুর রহমানকে।

তার বৈধ সম্পদের অনুসন্ধান চলার মধ্যেই দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই আরেকটি মামলা হয়। সেই মামলায় মিজানের ৩ বছরের এবং বাছিরের ৮ বছরের সাজার রায় দিয়েছে আদালত।

পুরনো খবর

Also Read: ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ

Also Read: ঘুষ লেনদেন: ডিআইজি মিজানের ৩ বছর সাজা, দুদকের বাছিরের ৮ বছর

Also Read: ৪০ লাখ টাকা ঘুষ: পুলিশের মিজান, দুদকের বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা

Also Read: ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা