শাহরিয়ার কবির দুই দিনের রিমান্ডে

এবার তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে যাত্রাবাড়ীতে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহতের মামলায়।

আদালতে শাহরিয়ার কবির, ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরকে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মাহাবুল ইসলাম রোববার শাহরিয়ার কবিরকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম আলী হায়দার দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড শুনানি করেন ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেন, “শাহরিয়ার কবির এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি। এই আসামি একজন নাস্তিক। মুসলমানদের বিরুদ্ধে উনি অনেক কথা বলেছেন। নাস্তিকরা আবার আওয়ামী লীগ সরকারকে পছন্দ করতেন।

“আওয়ামী লীগ সরকারও নাস্তিকদের ভরণ-পোষণ করে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তারা আবার রুখে দাঁড়াতেন। এই হত্যা মামলার সাথে আসামি জড়িত রয়েছে। মামলার তদন্ত স্বার্থে প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”

অন্যদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, “আসামির বিরুদ্ধে মামলায় সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি একজন শিক্ষক, কলামিস্ট। তিনি সারাজীবন শিক্ষকতা করেছেন। আসামির হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, পায়ে রড লাগনো, অসুস্থ ব্যক্তি। যেহেতু তিনি অসুস্থ, তাই এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন হলে তাকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।”

এরপর এ আইনজীবী আদালতকে বলেন, অনুমতি দিলে শাহরিয়ার কবির কিছু বলতে চান।

আদালত অনুমতি দিলে শাহরিয়ার কবির বলেন, “আমি এর আগে রিমান্ডে গেছি। হুইল চেয়ার ছাড়া হাঁটতে পারি না। আমার পায়ে সমস্যা রয়েছে। মামলা বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চাই না। তবে সঠিকভাবে আমার চিকিৎসার প্রয়োজন। গত ৪ মাস ধরে আমি অসুস্থ। আমি এখনও চিকিৎসার জন্য কারা হাসপাতালে রয়েছি। কাশিমপুর কারাগারে আমার ট্রিটমেন্ট হচ্ছে না। আমি সর্দি, কাশি, জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত।

আমার ভালো ট্রিটমেন্টের জন্য একটু পুলিশ সুপারকে যদি বলে দিতেন, তাহলে ভালো হত।”

এ বক্তব্যের পর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “যখন বাইরে কোনো মিছিলে তাকে দেখি, তখন তিনি সুস্থ থাকেন। আদালতে এলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এগুলো সব টালবাহানা।”

গত ১৭ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে রাজধানীর মহাখালীর বাসা থেকে শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ছাত্র আন্দোলনের সময় লিজা আক্তার নামের এক গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগে রমনা মডেল থানার মামলায় তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

রিমান্ড শেষ ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এবার তাকে নতুন মামলায় রিমান্ডে পাঠানো হল।

এ মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ীর মনোয়ারা হাসপাতালের সামনে রফিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যৃ হয়।