‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ চিকিৎসক গ্রেপ্তার না করার দাবি চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোর।
Published : 18 Jul 2023, 12:44 AM
কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং হেনস্তা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি হয়রানি বন্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সোমবার রাতে চিকিৎসকদের ফেডারেশন অব অল সোসাইটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
ভার্চুয়াল এ সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের ৪০টি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোম ও মঙ্গলবার দুদিন ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা এবং অস্ত্রোপচার বন্ধ রেখেছেন দেশের গাইনি চিকিৎসকরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে চিকিৎসকদের অন্যান্য সংগঠনগুলোও।
চিকিৎসা খাতের প্রায় সব চিকিৎসক তাদের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা এবং অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।
এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার রাত ১০টায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ফেডারেশন অব অল সোসাইটি। এতে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর।
তার দাবি, কোনো দেশেই ভুল চিকিৎসা নিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল হয় না। বিনা তদন্তে চিকিৎসক গ্রেপ্তার হয় না। এমনকি শুধু আবেগে প্রভাবিত হয়ে চিকিৎসক গ্রেপ্তার করা হয় না।
তার দাবি, আইনের ধারা ৮৮, ৩০৪ ও ৩০৪/ক এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে দুজন চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে চিকিৎসক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “চিকিৎসায় অবহেলা আমরা কোনোভাবে সমর্থন করি না। অবহেলা প্রমাণ করার জন্য যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার বিপক্ষে আমরা নই।”
বিদেশে চিকিৎসাজনিত কারণে রোগীর মৃত্যু হলে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে চিকিৎসক, রোগীর নিকটাত্মীয় এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত টিম প্রতিবেদন তৈরি করে- এমন তথ্য দিয়ে ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত ছাড়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়না।
তার মতে, “তদন্ত ছাড়া চিকিৎসককে পুলিশ হয়রানি বা গ্রেপ্তার হলে মুমূর্ষু রোগীকে চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকরা সাহস হারিয়ে ফেলবেন। এতে করে সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সোসাইটি অব সার্জনস বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, "আমরা চাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত হোক। এজন্য দরকার নিরাপদ কর্মস্থল। যারা ভুল চিকিৎসা করছে আমরা তাদের পক্ষে না, কিন্তু তাড়াহুড়া না করে, নির্দোষ কেউ যেন শাস্তি না পায় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।"
সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. টিটু মিঞা বলেন, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রতীকী কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে।
“প্রথমেই কঠোর কর্মসূচিতে আমরা যাইনি। প্রথমে কালোবাজ ধারণ, মানববন্ধন এবং পর্যায়ক্রমে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে গাইনি চিকিৎসকদের সংগঠন ওজিএসবির সভাপতি অধ্যাপক ফারজানা দেওয়ান সহ চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
চিকিৎসক ধর্মঘট: চেম্বার-হাসপাতাল থেকে রোগীরা ফিরছেন, ভোগান্তি
তদন্ত ছাড়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার, বিএমডিসির পদক্ষেপ চায় বিএমএ
চিকিৎসক গ্রেপ্তার: চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ দেশজুড়ে
দুই চিকিৎসকের মুক্তি দাবিতে দুদিন রোগী না দেখার ঘোষণা
চিকিৎসক গ্রেপ্তার: দুদিন চেম্বার, অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখবেন গাইনি চিকিৎসকরা
নবজাতক ও মায়ের মৃত্যু: সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মিলিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
নবজাতক ও মায়ের মৃত্যু: সেন্ট্রালের চিকিৎসক শাহজাদীর জামিন ফের নাকচ
অবহেলায় মৃত্যু: আবার সংযুক্তা সাহার ওপর দায় চাপাল সেন্ট্রাল হাসপাতাল
ডা. সংযুক্তার বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা সেন্ট্রাল হাসপাতালের