টাইমের উদীয়মান সবচেয়ে প্রভাবশালীদের তালিকায় ‘লিডার্স’ ক্যাটাগরিতে তৃতীয় অবস্থানে রাখা হয়েছে নাহিদ ইসলামকে।
Published : 03 Oct 2024, 11:30 PM
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন থেকে ‘এক দফার’ ডাক দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম উঠে এসেছেন টাইম ম্যাগাজিনের ‘টাইম১০০ নেক্সট ২০২৪’ তালিকায়।
প্রতি বছর বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে মার্কিন এই সাময়িকী। এবারের তালিকায় ‘লিডার্স’ ক্যাটাগরিতে তৃতীয় অবস্থানে রাখা হয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তরুণ এ উপদেষ্টাকে।
তুমুল গণ আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট টানা সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ শাসনের অবসানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা হয়েছেন নাহিদ।
তার সম্পর্কে টাইম লিখেছে, “বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের একজনকে গদি থেকে নামাতে নাহিদের ২৬ এর চেয়ে বেশি বয়সী হতে হয়নি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী যাদের মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম সমাজ বিজ্ঞানের এই স্নাতক।
“আন্দোলনের অনেক নেতাদের মধ্যে তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিতি পান দেশের ’কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থার’ হাতে নির্যাতিত হওয়ার পর। নির্যাতিত হওয়ার পরপরই তিনি এক দফার দাবি ঘোষণায় বলেন, হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর বিক্ষোভের জেরে গত ৫ অগাস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান হাসিনা।”
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে নামা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় গত জুলাই মাসে। আন্দোলন-বিক্ষোভের জেরে সংঘাত-সহিংতায় ব্যাপক প্রাণহানির একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফার ঘোষণা আসে ছাত্রদের সমাবেশ থেকে। গত ৩ অগাস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সেই সমাবেশ থেকে এক দফার ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
সেসময় তিনি বলেন, “আমাদের নয় দফা এখন এক দফায় পরিণত হয়েছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আমরা অসহযোগ আন্দোলন করব। পাশাপাশি দেশের সর্বত্র বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।”
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৬ অগাস্ট ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি দিলেও তা একদিন এগিয়ে নিয়ে আসা হয়। ৫ অগাস্ট সেই কর্মসূচির দিন ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে দুপুরে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে ভারতে চলে যান টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় বসা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
টাইমকে নাহিদ বলেন, “কেউ ভাবতেও পারেনি তাকে (শেখ হাসিনা) উৎখাত করা সম্ভব হবে।”
সাময়িকীটি লিখেছে, “সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন সামনে। সরকার পতনের পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে জায়গা পাওয়া দুইজন ‘জেন জি’ মন্ত্রীর একজন হয়েছেন নাহিদ ইসলাম। তাদের কাজ হল গত ১৫ বছরের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী সরকারের মেয়াদে ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হওয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সংস্কার করা।”
নাহিদ বলেন, “আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বোঝা উচিত। দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সহিংসতা অবশ্যই থামাতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।”
আরও পড়ুন-