এনআইডি সেবা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
Published : 19 Dec 2024, 06:17 PM
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ‘ঝুলে থাকা’ প্রায় পৌনে চার লাখ আবেদন আগামী তিন মাসে নিষ্পত্তি করার আশ্বাস দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর।
বৃহস্পতিবার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমি মাত্র এসেছি, দুই সপ্তাহ কাজ করেছি। যতটুকু জেনেছি, আমাদের একটা বড় সমস্যা হচ্ছে- আমরা আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করতে পারিনি।
“কমিশনের অনুমতি নিয়ে লোকবল কম নিয়ে হলেও ৫ থেকে ১০ দিনে বা এক মাসে হাজার হাজারে আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারব না। আমি আশা করছি, খুব শিগগিরই দেখতে পাবেন আমরা একটা ক্রাশ প্রোগ্রামের পরিকল্পনা করেছি। আগামী তিন মাসের মধ্যে এটা উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখতে পাবেন।”
অতিরিক্ত লোকবল নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে তিন লাখ ৭৮ হাজার আবেদনই নিষ্পত্তির চেষ্টা করব, যেন দুর্নীতি করার সুযোগটাই কমে আসে।”
বর্তমানে দেশে ১২ কোটি ১৮ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগ নিয়মিত সেবা দিয়ে আসছে। এর মধ্যে সংশোধনবিষয়ক অন্তত পৌনে চার লাখ আবেদন ঝুলে আছে নানা জটিলতায়।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এক মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি বিদায় নেয়। তখন এনআইডি সেবা সহজীকরণে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তৎকালীন ইসি সচিব।
২১ নভেম্বর এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নতুন ইসির যাত্রা শুরু হয়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যোগ দেন নতুন ইসি সচিব ও এনআইডি উইং ডিজি।
দুদকের হাতে আটক ২
এনআইডি সেবা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে ইটিআই ভবনে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি দল।
এএসএম হুমায়ুন কবীর জানান, দুদকের অভিযানের সময় দুজনকে আটক করা হয়েছে। এটা এখন তদন্ত করে দেখতে হবে কারা কারা সম্পৃক্ত।
তিনি বলেন, “সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক কৌশলে একটি টিম পাঠায়। তারা ইসি সচিবালয়ের চারদিকে নজর রাখেন; তদন্ত করেন। এসব কাজ করতে গিয়ে তারা দুজনকে ধরতে পারেন, যারা ইসি অফিসের কেউ নন, দালাল প্রকৃতির ।
“দুদক টিমের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, ওই দুজন তাদের মোবাইল থেকে আরও দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই দুজনের মধ্যে একজনের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে, আরেকজন মোবাইল রেখেই পালিয়ে যান। ওই মোবাইল থেকে আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের ভেতরের কারা কারা জড়িত।”
হুমায়ুন কবীর বলেন, “এনআইডি সেবায় ইসি সচিবালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের লোকজন সম্পৃক্ত থাকেন। আমাদের প্রকল্পের কেউ বা আমাদের ভেতরের কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকার সুযোগ রয়েছে। ওটাই এখন খুঁজে বের করছি।”
সকাল ১১টার দিকে ইসির অনুমতি নিয়ে দুদকের চার সদস্যের একটি টিম নিয়ে অভিযান চালায়। অভিযানের বিষয়ে দুদক সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ বলেন, “ভবনের চারপাশে ছদ্মবেশে গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছি আমরা সেবাগ্রহীতা সেজে।
“ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য, আনসার জড়িত থাকার অভিযোগ এসেছে। পুরোপুরি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “যারা ‘প্রাইমারি হ্যান্ডে’ কাজ করে, তাদের চিহ্নিত করছি। চ্যানেলওয়াইজ যা হচ্ছে, তা যাচাই করা হচ্ছে। কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের ব্যাংক হিসাব যাচাই করছি।”
পুরনো খবর...
ইসি সচিব শফিউল আজিম ওএসডি, এনআইডিতে নতুন ডিজি
এনআইডি সেবা নির্ভুল ও দুর্নীতিমুক্তে কাজ করছি: ইসি সচিব
এনআইডি সেবা সহজীকরণে 'তৎপর' ইসি