উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মাল্টিপারপাস গবেষণা রিয়্যাক্টর নির্মাণের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রোসাটমের মহাপরিচালক।
Published : 02 Apr 2024, 08:51 PM
চলতি বছরের শেষ নাগাদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।
পাশাপাশি সেখানে দুই ইউনিটের আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আলেক্সি লিখাচেভের নেতৃত্বে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানসহ বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে রোসাটমের মহাপরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন অর্জিত হতে যাচ্ছে। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই প্রথম ইউনিটের ফিজিক্যাল স্টার্টআপ হবে।
“বর্তমানে আমরা নতুন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করছি। রূপপুর এনপিপি সাইটে আরও দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশ গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মাল্টিপারপাস গবেষণা রিয়্যাক্টর নির্মাণের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। গবেষণা রিয়্যাক্টর বিজ্ঞান ও নিউক্লিয়ার মেডিসিন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমাধান দিতে সক্ষম।”
১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে পাবনার রূপপুরে। সেখানে দুটি ইউনিটে ১২০০ মেগাওয়াট করে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এই নির্মাণ ব্যয়ের ১০ শতাংশের অর্থায়ন করছে সরকার, বাকি ৯০ শতাংশ রাশিয়া ঋণ হিসাবে দিচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ হবে ৬০ বছর। পরে তা আরও ২০ বছর তা বাড়ানো যাবে বলে এর আগে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী।
বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ভাবনা ১৯৬১ সালে শুরু হলেও ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের আলোচনা গতি পায়।
২০১৩ সালের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে দুই দেশের সরকারের ফলপ্রসূ আলোচনার পর নিশ্চিত হওয়া যায়, রুশ সহযোগিতায় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে।
ওই বছরের অক্টোবরেই পাবনার ঈশ্বরদীতে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালের নভেম্বরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লি ও পানি শীতলকারী ডোমের কনক্রিট ঢালাই কাজ উদ্বোধন করেন।
২০২১ সালের শুরুতে একটি ইউনিট উৎপাদনে আসার কথা থাকলেও মহামারীর জটিলতায় তা পিছিয়ে যায়। সবশেষ ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করা যাবে বলে আশা করা হলেও ইউক্রেইন যুদ্ধসহ নানা জটিলতায় সেটা আর হয়নি।