তিনি বলছেন, বাংলাদেশে মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধার মাধ্যমে নাগরিক সমাজের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
Published : 30 Oct 2022, 10:59 PM
সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থেই নাগরিক সমাজের মুক্তভাবে মত প্রকাশের পরিবেশ রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার ব্যেয়ারবেল কফলার।
বাংলাদেশ-জার্মানি সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি দেখতে পাচ্ছি বর্তমানে বাংলাদেশে নাগরিক সমাজ ও স্থানীয় সহযোগীরা কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধার মাধ্যমে নাগরিক সমাজের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
কফলার বলেন, “সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য নাগরিক সমাজ ও তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
“কারণ যাদের জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তাদের কথা আমাদের শুনতে হবে। তারা যেন মুখ খুলতে এবং মুক্তভাবে কথা বলতে পারে।”
ঢাকার একটি হোটেলে জার্মান দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বিবর্তনের জন্য: বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জার্মানি-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভূমিকা’ শীর্ষক বক্তব্য দেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে কফলার বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বব্যাপীই অনুভব করা যায় এবং বিশেষভাবে বাংলাদেশে।
“সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি দেশের এক-পঞ্চমাংশকে স্থায়ীভাবে পানির নিচে তলিয়ে দেওয়ার হুমকিতে ফেলেছে। এটা হলে ২০৫০ সালের মধ্যে ৩০ কোটি লোক অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে যাবে।”
শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের তরফে আরও উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের কাজের পরিবেশের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে, বিশেষ করে পোশাক খাতে। তাদের জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে অনেক কিছু করার আছে।”
অধিকারের দাবি কেবল শ্রমিকদের দিক থেকে নয়, ভোক্তা ও সরবরাহ ব্যবস্থাসহ সবপর্যায় থেকেই তোলা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জার্মান এই ভাইস মিনিস্টার বলেন, “যেকোনো সমাজের উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়নেরও প্রয়োজন। এ কারণে আমি আমার নির্বাচনী প্রচারের সময় বলেছি, প্রত্যেক দেশে করারোপের ক্ষেত্রে ন্যায্য ভিত্তি দরকার।
“তার জন্য অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার, যাতে প্রত্যেকে তার নিজস্ব ভাগের অর্থ পরিশোধ করতে পারে।”
তিনি বলেন, “ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন খাদ্য ও জলবায়ু নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদেরকে বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি করেছে। সেকারণে জ্বালানিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা দরকার।”
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের একটি বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়। সেখানে তিনি দুদেশের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগিতা আরও জোরদারের আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ঢাকায় জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
কফলারের সঙ্গে প্যানেল আলোচনায় যোগ দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, পিকার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) প্রতিনিধি মো. এ রাজ্জাক, ইকোনমি অফ টুমোরো’র প্রতিনিধি সুসান সুহা।