দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম তাদের আয়কর নথি জব্দ চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
Published : 13 Jan 2025, 03:44 PM
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।
দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজের বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আমির হোসেন বলেছেন, দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ পরিচালক হাফিজুল ইসলাম তাদের আয়কর নথি জব্দ চেয়ে আবেদন করেন।
“এসময় দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত তাদের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন।"
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি আদালত বেনজীরের স্ত্রী জিশান মির্জা ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিসান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে গত ১৫ ডিসেম্বর চারটি মামলা করে দুদক। বেনজীরকে চার মামলাতেই আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বেনজীর ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তার স্ত্রী জীশান মীর্জা ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১৬ কোটি ১ লাখ টাকার তথ্য গোপন করেছেন।
এছাড়া এই দম্পতির বড় মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার এবং ছোট মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীর ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ প্রধান, যিনি একাধারে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট র্যাবেরও প্রধান ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান।
গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে তাকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক কালের কণ্ঠ। সেখানে সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। এরপর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ২২ এপ্রিল দুদক জানায়, বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে তারা। সেজন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পরে দুদকের আবেদনে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থাও নেয় দুদক।
বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তবে বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের জন্য দেওয়া চিঠিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে থাকার কথা বলেন। তারা সবাই দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে।
আরও পড়ুন