বরই-খেজুর বিতর্ক ‘মিডিয়ার তৈরি’ বলে ভাষ্য তার।
Published : 10 Mar 2024, 07:20 PM
রোজা এলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে কিছু ব্যবসায়ী পরিবার নিয়ে সৌদি আরব চলে যায় বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ূন।
তার ভাষ্যে, “পৃথিবীর অন্যান্য দেশে রমজান এলে ব্যবসায়ীরা মানুষকে সাহায্য করে, বড় বড় ব্যবসায়ীরা মানুষকে দান করে। ক্রিসমাসের মত (উৎসবে) সব পণ্যের দাম কমে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে হচ্ছে এর উল্টো।
“আমাদের দেশে আমরা এই ট্রেন্ড দেখছি না ব্যবসায়ীদের মাঝে… । অনেক বড় ব্যবসায়ী আছেন, তারা চান- যত বেশি লাভ করা যায়। এমন ব্যবসায়ীও আছে, দামটাম বাড়াইয়া সৌদি আরব গিয়া বইসা থাকে। ঈদের সময় তাদের পাওয়া যায় না, ফ্যামিলি নিয়া ওইখানেই থাকে।”
রোজায় নিত্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইয়ের নেওয়া বিশেষ কার্যক্রম সম্পর্কে তুলে ধরতে রোববার তেজগাঁওয়ে সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন নূরুল মজিদ হুমায়ূন।
তিনি বলেন, “খাদ্যে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। কোনো ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নাই। আমরা যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।
“আমরা ব্যবসায়ী ফ্রেন্ডলি, কিন্তু যারা এখানে অন্য ধরনের গেইম খেলতে চায়, প্রতারণা করতে চায় এবং যারা ভেজাল করতে চায়- তাদের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই।”
রোজার মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে গত ৪ মার্চ শিল্পমন্ত্রী বলেছিলেন, “অভাব-অভিযোগ তো আছেই। আমরা সবকিছুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ না। বাইরে থেকে অনেক জিনিস আমদানি করতে হয়। সেগুলো আপনাদেরকে বুঝতে হবে।
“বরই দিয়ে ইফতার করেন না কেন? আঙ্গুর লাগবে কেন, আপেল লাগবে কেন? আমাদের দেশে আর কিছু নাই? পেয়ারা দেন না, প্লেটটা ওইভাবে সাজান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন যে, ইফতার পার্টি দরকার নেই। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। আপনার সংসার যেমন আপনি দেখেন, আপানারা সাংবাদিকরা দেশটারেও এভাবে দেখেন। খালি আকাশ থেকে দেইখেন না। নিচের থেকে আশপাশে দেখেন।”
এ বক্তব্যের বিষয়ে রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নে নূরুল মজিদ হুমায়ূন বলেন, “বিষয়টির ভিন্ন ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি আগেও বলেছি, মিসইন্টারপ্রেট করা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে। আমি বিস্তারিত বলেছি… এবং অনেকের অনেক জায়গায় জ্বালা আছে। সেই জ্বালা থেকে তারা হয়তো ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। ওই কষ্ট তো আমরা লাঘব করতে পারব না।
“জনগণই বিচার করবে, আমরা কোনো উত্তর দিতে চাচ্ছি না। তারা পাগল হয়ে গেছে। আমি খেজুরের পরিবর্তে বলিনি- মাইন্ড ইট; আমি বলেছি খেজুরের সঙ্গে, খেজুরের সাথে …. ইফতারের প্লেটটা আমাদের দেশীয় ফল দিয়ে সাজান।”
শিল্পমন্ত্রী বলেন, “খেজুর দিয়ে ইফতার করা একটা ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়। আমাদের লোকজন খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করে। সরকার খেজুরের শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে।”
শিল্পমন্ত্রীর সেদিনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এর পরদিন ক্ষোভ ঝাড়েন জাসদের সভাপতি হাসানুল ইনু।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে তার খুব ভালো সম্পর্ক। ইনু এ ধরনের কথা বলতে পারেন- তা তিনি বিশ্বাস করেন না।
“উনি আমার বড় ভাই, উনার সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। উনি এটা মিসইন্টারপ্রেটেড হয়ে করেছেন কি না জানি না। উনার যে রাজনৈতিক লেভেল, তাতে ওই ধরনের কথা বলার কথা না। আমি বিশ্বাস করি না এটা, আমার মনে হয় এগুলো মিডিয়ার তৈরি।
“হি ইজ ভেরি ক্লোজ টু মি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী সে। কিন্তু অন্য যারা করেছে, তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য, সরকারকে বিব্রত করার জন্য এটা করা হয়ে থাকতে পারে।”
গরিব মানুষ বরই খাবে, আর তুমি আঙুর-খেজুর খাবা? শিল্পমন্ত্রীকে ইনু
অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকায় পরিবর্তন আসছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী