আগামী অর্থবছর থেকে স্থায়ী দোকানের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে বলেও জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
Published : 04 Mar 2024, 04:12 PM
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রায় ৭০ বছর আগের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনটি পরিবর্তনে জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সোমবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কীভাবে জেলা প্রশাসকরা ভূমিকা রাখতে পারেন, মন্ত্রণালয় থেকে তা জানতে চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ডিসিদের পক্ষে থেকে বলা হয়েছে ১৯৫৬ সালের এসেনশিয়াল কমোডিটি অ্যাক্ট যেটা আছে সেটাকে যুগোপযোগী করা। তালিকায় যে পণ্যগুলো আছে, সেই পণ্যগুলো আপডেট করা। আমরাও তাদের সঙ্গে একমত। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের নিয়ে একটা মিটিং করে এই আইনটাকে কিভাবে যুগোপযোগী করা যায়, তা অচিরেই করব।”
টিসিবির পণ্য সংগ্রহ করতে কার্ডধারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয় বলে আগামী অর্থবছর থেকে স্থায়ী দোকানের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে ৭ হাজার ৭০০ টিসিবি ডিলার আছে। তারা প্রাথমিকভাবে ট্রাকে এবং পরবর্তীতে খোলা জায়গায় জিনিসগুলো বিতরণ করত। এতে মানুষের কষ্ট হয়, টিসিবির একটি প্যাকেজ দিতে একটি দিন চলে যায়।
“স্থায়ী দোকানে আমরা কিভাবে ডিলার নিয়োগ করতে পারি, আগামী দুই মাসের মধ্যে জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশ অনুযায়ী জনপ্রশাসন আমাদের তালিকাটা পাঠাবে। আগামী অর্থবছরে ইনশা আল্লাহ স্থায়ী দোকানের মাধ্যমে আমরা টিসিবির পণ্যগুলো দিতে পারব।”
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির বিষয়ে সোমবার ভারতের চিঠি পাওয়া গেছে। কবে, কীভাবে তারা মাল পাঠানো শুরু করবে সেটা অ্যাম্বাসি আমাদের জানাবে। সেটি আজকেই আমরা জানতে পারব। অবশ্যই রোজার আগে পেঁয়াজ এবং চিনি ভারত থেকে আসবে।”
রোজায় এক কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সেখানে চাল, তেল, চিনি, ডাল, খেজুর ও ছোলা থাকবে। বিতরণ ব্যবস্থাটা যেন সুষ্ঠুভাবে হয় সেই সহযোগিতা চেয়েছি। কারণ এই বিতরণটা জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে হয়।
বর্তমানে টিসিবির যে এক কোটি পরিবার কার্ডধারী আছেন সেটি ২০২০ সালে করা হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে এই তালিকা আপডেট করার জন্য তাদের নির্দেশ দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংযোজন ও পরিবর্ধন করে দেয়।
বরই দিয়ে ইফতার করেন না কেন: শিল্পমন্ত্রী
কার্য অধিবেশন শেষে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জিআই পণ্যের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে বলেন, “আসল জিআই হচ্ছে বাংলাদেশ, যেটা বঙ্গবন্ধু সারা বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। এই যে লাল-সবুজের পতাকা, এর চেয়ে বড় জিআই হয়না। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের পণ্যগুলোকে বিশ্বমানের করতে হবে, বাজারজাত করতে হবে।”
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা ওয়েল সেটিসফাইড, জেলা প্রশাসকরা যেভাবে কাজগুলো করেছেন। আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে মাঠে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আগামী রোজার মাসেও তারা সঠিকভাবে মাঠে থাকবেন।”
রোজার মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “অভাব-অভিযোগ তো আছেই। আমরা সবকিছুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ না। বাইরে থেকে অনেক জিনিস আমদানি করতে হয়। সেগুলো আপনাদেরকে বুঝতে হবে।
“বরই দিয়ে ইফতার করেন না কেন? আঙ্গুর লাগবে কেন, আপেল লাগবে কেন? আমাদের দেশে আর কিছু নাই? পেয়ারা দেন না, প্লেটটা ওইভাবে সাজান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন যে, ইফতার পার্টি দরকার নেই। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। আপনার সংসার যেমন আপনি দেখেন, আপানারা সাংবাদিকরা দেশটারেও এভাবে দেখেন। খালি আকাশ থেকে দেইখেন না। নিচের থেকে আশপাশে দেখেন।”