চারুকলার শোভাযাত্রায় ফিলিস্তিনের গণহত্যার প্রতিবাদ জানাবেন শিল্পীরা।
Published : 09 Apr 2025, 07:09 PM
বাংলা বর্ষবরণ অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে রঙে, কন্টেন্টে এবং আয়োজনে আলাদা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
তিনি বলছেন, দেশে বসবাসরত বাঙালির পাশাপাশি অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীকেও যুক্ত করা হয়েছে এবারের আয়োজনে। ফলে এবারের আয়োজন হবে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’।
ইতোমধ্যে ছায়ানট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার পাশাপাশি বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বামবা), সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী, সুরের ধারাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভাও করা হয়েছে।
এছাড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়েও সভা করা হয়েছে।
বর্ষবরণের আয়োজনে কোনো রকম নিরাপত্তা ঝুঁকিও দেখছেন না সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
দেশজুড়ে চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণের নানা আয়োজনের খবর বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সভা করেছি। আমি মনে করি না যে নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি আছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রাটি বের হয়, তাতে এর আগে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের মিছিলের মতো দেখা গেলেও এবার সেটি কমিয়ে আনার ব্যাপারেও কথা হয়েছে বলে জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “সমাজের একটা গোষ্ঠীর সঙ্গে আরেকটা গোষ্ঠীর দূরত্ব, অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আমরা সেটি দূর করে সবাইকে নিয়ে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ বর্ষবরণের আয়োজন করছি।”
এবারের শোভাযাত্রায় কৃষক একটা বড় থিম হিসেবে থাকবে বলেও জানান ফারুকী।
বাংলা নববর্ষ এবং পাহাড় ও সমতলের জাতিগোষ্ঠীদের বর্ষবরণ উৎসব নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলে ইতোমধ্যে উৎসবের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করছি। এসব উৎসবকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলে যে বাঙালিরা থাকেন, তারাও আমাদের উৎসব উপভোগ করছেন।
“আমরা যেন সবাই সম্প্রীতি নিয়ে পাশাপাশি চলাফেরা করতে পারি, এটাই আমরা চাই। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই, এবার সবাইকে নিয়ে এই আয়োজনটি পরিকল্পনা করার জন্য।”
দেশজুড়ে আয়োজন
বরারবরের মতোই এবারও বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করবে ছায়ানট, সুরের ধারা। তবে সুরের ধারার আয়োজনটি এবার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে হবে বলে জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
এছাড়া চৈত্রসংক্রান্তিতে শিল্পকলার আয়োজনে ১২ জেলায় সাধুমেলা হবে। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে কনসার্ট। চারুকলার শোভাযাত্রায় ফিলিস্তিনের গণহত্যার প্রতিবাদ জানাবেন শিল্পীরা।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “আমরা নববর্ষের উৎসবে যেন ভুলে না যাই পৃথিবীতে একটা বড় গণহত্যা চলছে।”
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলাসহ ৩০টি জেলায় বৈশাখী লোকনাট্য উৎসব আয়োজিত হবে বলেও জানান ফারুকী। চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখের অনুষ্ঠানে বাঙালিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা অংশ নেবেন।
সাংগ্রাই, বিজু, বৈসু, বিহ, সাংলান ও বাংলা নববর্ষ ঘিরে দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হবে বলেও মনে করছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।