যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি বন্দি ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
Published : 12 Dec 2023, 06:49 PM
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের চলমান যুদ্ধে বিরতি দিয়ে সেখানে মানবিক সহায়তার উপকরণ পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনশ্যেন্সের সদস্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি সব ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদেরও মুক্তি দিয়ে উভয়ের সমানাধিকরের আহ্বানও জানায় কর্তৃপক্ষ।
ঐতিহাসিক স্থান, জাদুঘর এবং স্মৃতি সংরক্ষণ পদক্ষেপের একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক হল ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনশ্যেন্স। ১৯৯৯ সালে এটি গড়ে তোলা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বার্তায় বলা হয়, “গাজায় আমরা আজ যা দেখছি তা হল, একটি নৈতিক পরাজয় এবং একটি মানবিক বিপর্যয়, যা বিশ্বকে গভীর মেরূকরণ আর সহিংসতার নতুন চক্রে নিমজ্জিত করবে। মাত্র ছয় সপ্তাহে গাজায় ১২ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচ হাজার শিশু।
“গুরুতরভাবে আহত হাজারো মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা গ্রহণে অক্ষম। ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে অনেকে। ইসরায়েলের অবরোধ এবং হাসপাতালগুলোতে হামলার কারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে হাসপাতালে মারা যাচ্ছে রোগীরা এবং এদের মধ্যে অবুঝ শিশুরাও রয়েছে। হাজারো পরিবার অপেক্ষা করছে তাদের নিখোঁজ প্রিয়জনের আশায়।”
গত ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর থেকে গাজাকে অবরুদ্ধ করে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরা চলা যুদ্ধে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী শিবির ও হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে গাজার বাসিন্দারা। তবে সেসব শিবির ও হাসপাতালেও ইসরায়েলের আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি কাতারের মধ্যস্থতায় পর্যায়ক্রমে এক সপ্তাহের সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। সেসময় উভয় পক্ষের বেশকিছু বন্দিদেরও মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতির আলোচনা পরে ভেস্তে যাওয়ায় ফের গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সহিংসতা কখনোই শান্তি ও নিরাপত্তা বয়ে আনতে পারে না। সহিংসতা কেবল সহিংসতার জন্ম দেওয়ার পাশাপাশি অন্যের প্রতি সহানুভূতি ও সমবেদনা হ্রাস করে এবং যুদ্ধরত দলগুলোকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে বাধা দেয়।
“আত্মরক্ষার নামে গাজার বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান আক্রমণ কেবল বেআইনিই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতায় অবদান রাখছে। একইসঙ্গে এটি সহিংসতার নতুন চক্রকে ইন্ধন জোগাচ্ছে, কেননা ইতিমধ্যেই আমরা পৃথিবী জুড়ে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক আরববিরোধী, ইসলামফোবিক এবং ইহুদিবিরোধী কর্মকাণ্ড দেখতে পাচ্ছি।”