প্রধানমন্ত্রী অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা।
Published : 14 Jul 2015, 08:04 PM
মন্ত্রী হলেন বিএসসি, কামাল, ইয়াফেস; নতুন প্রতিমন্ত্রী তারানা, নুরুজ্জামান
বিএসসি প্রবাসী কল্যাণে, খাদ্যে নুরুজ্জামান, তারানা টেলিযোগাযোগে
মঙ্গলবার বঙ্গভবনে মন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নেওয়ার পর নুরুল ইসলাম বিএসসি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি যে দায়িত্ব পাব, সমস্যা চিহ্নিত করে প্রতিকারের ব্যবস্থা করব।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের এই নেতা।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এতদিন ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরানোর পর তাকে ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
এক সপ্তাহের মধ্যে নুরুল ইসলাম বিএসসি শপথ নেওয়ার পর এখন অতিরিক্ত দায়িত্বের ভার থেকে মুক্ত হলেন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ের শ্বশুর খন্দকার মোশাররফ।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন, দেশ ও জাতিকে কিছু দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। চেষ্টা করব জনগণকে ভালো কিছু দেওয়ার।
“বড় ধরনের কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না। যে সব চ্যালেঞ্জ ছিল, আমি এগিয়ে যেতে চাই। তিন বছর যথেষ্ট সময়। তিন বছরে ভালো মতো এগিয়ে যেতে পারব বলে আশা করছি।”
নিজের প্রতিমন্ত্রী হওয়াকে নারীর বিজয় হিসেবে দেখছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য তারানা হালিম।
শপথ নিয়ে তিনি বঙ্গভবনে সাংবাদিকদের বলেন, “এটা নারীর ক্ষমতায়নের বিজয়। শিল্প আমার অন্তরের বিষয়, আর এটা বিশ্বাসের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যে আমাকে দায়িত্ব দিয়ে ভুল করেননি, এটা প্রমাণ করতে চাই।”
সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার আত্মীয় তারানা হালিম অভিনেত্রী হিসেবে নাম কুড়ানোর পর গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয়।
“প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি তার প্রতি বিশ্বস্ত থেকে আমার শ্রম, মেধা, শিক্ষা সব কিছু দিয়ে জনগণের সেবা করার চেষ্টা করব।”
দপ্তর বণ্টনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ পেয়েছেন তারানা হালিম। মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে বাদ দেওয়ার পর এই মন্ত্রণালয়ে কোনো মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন না।
মঙ্গলবার নতুন যে পাঁচজন মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন, তাদের অন্যজন হলেন সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদ।
তৃণমূলের এই রাজনীতিক লালমনিরহাট-২ আসন থেকে দশম সংসদেই প্রথম নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। সংসদ সদস্য হওয়ার দেড় বছরের মধ্যে খাদ্য প্রতিমন্ত্রী হলেন তিনি।
নুরুজ্জামান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সফলতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করব। সচেতনভাবে এবং সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে চাই।”
কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাবা করিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৭০ সালে এমএনএ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এই তিনজনের সঙ্গে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে এদিন শপথ নিয়েছেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও ইয়াফেস ওসমান। এরা দুজনই প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন এতদিন।
উত্তরণ ঘটার পর আসাদুজ্জামান কামাল আগের মতো স্বরাষ্ট্র এবং ইয়াফেস বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েই থাকছেন, তবে এখন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মন্ত্রী হিসেবে আগের মতোই ‘সিনসিয়ারলি’ কাজ করার কথা বলেছেন ইয়াফেস ওসমান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনুভূতির খুব পরিবর্তন হয়নি। কারণ আগে যে কাজ করেছি, এখনও সে কাজই করব। আগে সিনসিয়ারলি কাজ করেছি, এখনও সিনসিয়ারলি কাজ করব। নতুন করে তো আর পাখা গজাবে না।”
প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী হওয়াকে পুরস্কার মনে করছেন কি না- জানতে চাইলে ইয়াফেস বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলিনি যে মন্ত্রী করতে হবে। তিনি ভালো মনে করছেন, তাই এটা করছেন।”
মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কাব্যচর্চা অব্যাহত রাখার কথাও বলেছেন কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের এই ছেলে।
প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী হয়ে দায়িত্ব বেশি অনুভব করছেন কি না- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “দায়িত্ব বাড়া বা কমার বিষয় নয়। আরও সতর্ক থাকার জন্য এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
“প্রধানমন্ত্রী সব সময় আমার ছায়ার মতো সঙ্গে ছিলেন। এখনও তিনি আমাকে গাইডলাইন দেবেন। চ্যালেঞ্জের মধ্যেই তো ছিলাম, আগে যা করেছি, এখনও তাই করব।”