চলতি বছর রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া।
Published : 24 Jun 2015, 06:24 PM
বুধবার কুয়ালালামপুরে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে এক বৈঠকে মালয়েশীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ জাহিদ হামিদি এ কথা জানান বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সরকারি পর্যায়ে (জি টু জি) কর্মী পাঠানোর জন্য ইতোমধ্যে আগ্রহীদের যে তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হয়েছে, সেখান থেকেই বাছাই করে এই পাঁচ লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া।
বৈঠকে শেষে জাহিদ হামিদী বলেন, “শুধুমাত্র বৈধ কর্মীরা মালয়েশিয়ায় কাজ করতে পারবেন। আর এজন্য আগ্রহীদের আবেদন করতে হবে অনলাইনে, যা হতে হবে সরকারের তদারকিতে।”
তিনি জানান, প্রত্যেক শ্রমিককে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে, এরপর তিনি আরও একবছর কাজ করার সুযোগ পাবেন।
এই ‘বি টু বি’ পদ্ধতিতে কম খরচে অভিবাসন নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “কর্মীদের নিরাপত্তা ও ওয়েলফেয়ারের বিষয়গুলো নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানকেই নিশ্চিত করতে হবে।”
বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির বড় বাজার মালয়েশিয়া। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে জি টু জি পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। সে অনুযায়ী শুধু সরকারিভাবে মালয়েশিয়ার ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছিল।
কিন্তু ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে কাজ করতে আগ্রহীর সংখ্যা কম হওয়ায় ওই উদ্যোগে আশানুরূপ সাফল্য পাওয়া যায়নি। সে সময় প্রতি ছয় মাসে ৫০ হাজার শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্য ঠিক হলেও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসেবে গত দুই বছরে পাঠানো হয়েছে মাত্র সাত হাজার।
এরপর জি টু জি পদ্ধতি সংস্কার করে এতে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কুয়ালালামপুরের বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী মালয়েশিয়ার একটি প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
ওই প্রতিনিধি দলের সফরের পরই কর্মী পাঠানোর বিষয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি হবে।
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাচারকারীদের একটি পরিত্যক্ত আস্তানায় গণকবর পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাগর পথে মানবপাচারের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়।
এরপর মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড উপকূলে সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাচারকারীদের কয়েকটি নৌকা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে, যারা বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য।
অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারিভাবে সুযোগ কমে যাওয়ার কারণেই অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে পৌঁছান বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সঙ্গেও তার সাক্ষাতের সূচি রয়েছে।