নাগরিকদের হাতে আগামী অগাস্ট থেকে ‘স্মার্ট’ পরিচয়পত্র দেওয়া শুরু করবে নির্বাচন কমিশন।
Published : 01 Jun 2015, 10:17 AM
তবে কোনো জাতীয় দিবস সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধনের কথা ভাবা হচ্ছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে স্মার্ট কার্ড বিতরণের জন্য গত ১৪ জানুয়ারি ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি করে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন-জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
এর আওতায় ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে ৯ কোটি ভোটারের হাতে স্মার্ট কার্ড পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এই স্মার্ট কার্ড তিন স্তরের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকবে।
ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আর বিলম্ব হবে না। স্মার্ট কার্ড দেওয়ার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে, শিগগিরই কার্ড প্রস্তুত শুরু হবে। উদ্বোধনের সময় নির্ধারণ হওয়ার পরই গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানাব।”
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন জানান, স্মার্ট কার্ড বিতরণে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করানোর একটি পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তাদের সময় পাওয়া সাপেক্ষে তা নির্ধারণ করা হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আঠারোর কম বয়সীদের তথ্য সংগ্রহের কাজও শিগগিরই শুরু হবে।
আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস-আইডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার এ কার্যক্রম চলবে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান এ প্রকল্পেরও পরিচালক।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অগাস্টে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হবে। সবকিছু ইসির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তবে এটা বলতে পারি- এ বছরের মধ্যে স্মার্ট কার্ড নাগরিকরা হাতে পেতে শুরু করবেন। আমরা চাই, আগামী জুনের মধ্যে সবাই পাক।”
আঠারোর কম বয়সীদের জন্য দ্বিতীয় প্রকল্পও আসছে
১৮ বছরের কম বয়সীদের স্মার্ট কার্ড দিতে দ্বিতীয় প্রকল্পের (আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস-আইডিয়া-টু) জন্য বিশ্ব ব্যাংকের কাছে প্রায় ২৫ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তার একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম ও প্রকল্প পরিচালক সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন স্বাক্ষরিত ওই প্রস্তাব ২১ মে অর্থনেতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধির কাছে পাঠানো হয়।
নতুন এ প্রকল্পের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সম্মতি রয়েছে বলেও এক চিঠিতে জানানো হয়।
এ প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হবে- ১৮ বছরের কম বয়সীদের তথ্য জাতীয় তথ্যভাণ্ডারে নেওয়া এবং আরও প্রায় ৯ কোটি স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা।
আগামীতে থাকবে ‘ইউনিক আইডি’
সুলতানুজ্জামান জানান, ভবিষ্যতে সব নাগরিকই সব সেবার জন্যে একটি নির্দিষ্ট পরিচিতি নম্বর পাবেন।
“ওই নম্বরই হবে তাদের পরিচিতি। ইউনিক আইডি সিস্টেম চালু করছি। যখন একটা বাচ্চা জন্ম নেবে তার একটা আইডি হবে। তার জন্ম নিবন্ধন হয়ে গেলে তার নিবন্ধন নম্বর আর পরিবর্তন হবে না। এটাই পরবর্তীতে এনআইডি নম্বর হবে।”
বুয়েট, কম্পিউটার কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেই বিষয়টি কমিশনকে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।
“ইসির নিবন্ধন বিভাগ থেকে নির্ধারিত ক্রমিকের নম্বর জন্ম নিবন্ধনের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দেওয়া হবে। জন্ম নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ ওই নম্বরেই জন্ম নিবন্ধন করবে। যখনই শিশুটি আইডি কার্ড পাওয়ার যোগ্য হবে তখনই ওই নম্বরে তাকে কার্ড সরবরাহ করা হবে।”