বাস ডাকাতির ঘটনায় চালক ও তার সহকারীকে ‘মামলায় জড়ানোর’ প্রতিবাদে দক্ষিণের জেলাগুলোয় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
Published : 20 May 2015, 03:40 PM
বুধবার সকালে ধর্মঘট শুরুর পর রাজধানী থেকেও এসব জেলায় সীমিত সংখ্যক যান চলাচল করছে বলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
ফরিদপুরের মধুখালীতে বেনাপোলগামী সোহাগ পরিবহনের একটি নৈশকোচে সোমবার রাতে ডাকাতির পর যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসটির চালক আয়নাল হোসেন (৪০) ও তার সহকারী শাকিলকে (২৬) আটক করে।
পরে ডাকাতির মামলা করে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে মধুখালী থানার ওসি রুহুল আমিন জানান।
তবে সোহাগ পরিবহনের বেনাপোল অফিসের ব্যবস্থাপক সহিদুল ইসলাম দাবি করেছেন, ডাকাতির পর চালক বাস নিয়ে মধুখালী থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ তাদের আটক করে কারাগারে পাঠায়। এরই প্রতিবাদে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, যশোর পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে এই পরিবহন ধর্মঘটে যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, ঝিনাইদহসহ ওই অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ কর্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
সকালে ফরিদপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে গেলেও বেলা ১২টার পর ঢাকার পথে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
বেনাপোল প্রতিনিধি জানান, ভারতফেরত কয়েকশ যাত্রী বেনাপোলে আটকা পড়েছেন। দূরপাল্লার বাস না ছাড়ায় তারা বিভিন্ন বাসের কাউন্টার ও আবাসিক হোটেলে অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বেনাপোলে ঈগল পরিবহনের কাউন্টারে ঢাকার শাঁখারীবাজারের মিনতি রানী দাস ও ব্যবসায়ী শম্ভুনাথ সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তারা সকালে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন।কিন্ত বাস বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না।
কমিউটার ট্রেন চলাচল করায় কেউ কেউ রেলপথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
খুলনা বিভাগীয় মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাদাৎ মৃধা জানান, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোনাডাঙ্গা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোন বাস ছেড়ে যায়নি।
সাতক্ষীরার এ কে ট্রাভেলসের কর্ণধার তাহমিদ সাহেদ চয়ন বলেন, “শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা চলছে। মীমাংসা হওয়ার আগে কোনো বাস সাতক্ষীরা ছেড়ে যাবে না।”
দুপুরে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকাগামী বাসের কাউন্টারগুলোতে বহু যাত্রীকে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। আগাম টিকেট নেওয়া অনেক যাত্রী বাস না পেয়ে ফিরে গেছেন বলে আমাদের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান।
ঢাকার গাবতলী থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী অল্প কিছু বাস ছেড়ে গেলেও অনেক প্রতিষ্ঠান বাস ছাড়েনি বলে দারুস সালাম থানার উপ পরিদর্শক জাহানুর আলম জানান।
যশোর জেলা বাস, মিনিবাস, ট্রাক লরি ওনার্স মালিক শ্রমিক সমম্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক পবিত্র কাপুড়িয়া বলেন, গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তাদের ধর্মঘট চলবে।
তিনি বলেন, “সোহাগ পরিবহনে ডাকাতির সঙ্গে বাসের স্টাফরা জড়িত থাকতে পারে না। তাদেরকে বিনা দোষে আটক করা হয়েছে।”