বিএনপিসহ বিরোধী জোটের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে সহিংস কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
Published : 23 Jan 2015, 11:04 PM
সংস্থাটি বলছে, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে নিরাপরাধ মানুষের ওপর নৃশংসতা গ্রহণযোগ্য নয়।
নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে গত ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করার জন্য গুলশানের কার্যালয় থেকে বের হতে না পেরে সারা দেশে লাগাতার অবরোধ ডাকেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বিরোধী জোটের এই কর্মসূচির মধ্যে বিভিন্ন পরিবহনে পেট্রোল বোমা হামলায় দগ্ধ হয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে মানবাধিকার কমিশন এ ধরনের অপরাধকর্মের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, যারা এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করছে তাদের আইনের আওতায় এনে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে রাষ্ট্রপক্ষকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমশ নাজুক হয়ে পড়ছে বলেও মনে করে সংস্থাটি।
কমিশন বলেছে, চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে গত বছরের ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াত জোট দেশজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। সে সময় ভোটকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত অন্তত ৬০০টি স্কুল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ফলে বছরের শুরুতে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হয়েছিল।
রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছে, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনগণকে জিম্মি করা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মানবাধিকর পরিস্থিত নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের দেওয়া বিবৃতিতে সঠিক তথ্য উঠে আসেনি বলে দাবি করেছে কমিশন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলেছে, উভয় বিবৃতিতে মানবাধিকার পরিস্থিতি নাজুকের পেছনে রাজনৈতিক বিষয়টি মূখ্য হিসেবে দেখা হয়েছে। সহিংসতাকে যে রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সে বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি।
কমিশন মনে করে, সহিংসতা ও সন্ত্রাস রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের উপায় হতে পারে না।
“কমিশন যেমন বিনাবিচারে আটক বা হত্যাকে অগ্রহণযোগ্য মনে করে একইভাবে সন্ত্রাসকে ব্যবহার করে জনমনে আতঙ্ক ভীতি তৈরি করে রাজনৈকি লক্ষ্য অর্জনের উপায়কে অগ্রহণযোগ্য।”
বিবৃতিতে চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমানসহ সদস্য কাজী রিয়াজুল হক, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, সেলিনা হোসেন, অ্যারমা দত্ত, অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ ও নিরূপা দেওয়ানের স্বাক্ষর রয়েছে।